সপ্তম অধ্যায় । Եrd: শ্রবণ করিয়াছেন। উপদেশ লাভ করিলেই যে বিশেষ ধৰ্ম্মজ্ঞান হয়, আমরা সেকথা বলিতেছি না; ধৰ্ম্ম ব্যক্তিগত জীবনে সাধনের সামগ্রী। সীতা বিদুষী না হইলেও নিজজীবনে এই ধৰ্ম্ম সাধন করিয়াছিলেন, সুতরাং ধর্মের স্বল্প তত্ত্বসকল তাহার পরিজ্ঞাত ছিল। স্বামী তাপসত্ৰত অবলম্বন পূৰ্ব্বক যে হিংসা কার্য্যে ব্যাপৃত থাকিবেন, ইহা কোনমতেই যুক্তিযুক্ত ও ধৰ্ম্মসঙ্গত নহে। রামচন্দ্র যখন রাক্ষসবধে প্রতিজ্ঞ করেন, তখনই সীতা তাহাকে নিজ অভিমত জ্ঞাপন করিতে মনস্থ করিয়াছিলেন, কিন্তু সকলের সম্মুখে লজ্জাবশতঃ তিনি তদ্বিষয়ে কৃতকাৰ্য্য হন নাই। আজ স্বতীক্ষুের আশ্রম হইতে পথে যাইতে যাইতে সীতা অবসর বুঝিয়া রামকে বলিতে লাগিলেন “নাথ, ধৰ্ম্ম অতিশয় স্বক্ষবিধানের গম্য ; সৰ্ব্বপ্রকার ব্যসন হইতে মুক্ত না হইলে কদাপি ধৰ্ম্মলাভ হয় না। ব্যসন তিনপ্রকার ;–মিথ্যাকথন, ইন্দ্রিয়পরতন্ত্রত ও বৈরব্যতীত রৌদ্রভাব ধারণ। পূৰ্ব্বোল্লিখিত দুইটি দোষ তোমাকে কখনও স্পর্শ করে নাই ; তুমি সততই সত্যপরায়ণ ও জিতেজিয় বলিয়া জগদ্বিখ্যাত আছ। কিন্তু নাথ,তোমাতে অকারণ প্রাণিহিংসারূপ কঠোর ব্যসনটি ঘটিবার উপক্রম হইয়াছে। তুমি বনবাসী ঋষিগণের রক্ষাবিধানার্থ যুদ্ধে রাক্ষসবধ স্বীকার করিয়াছ এবং সেই নিমিত্তই ধনুৰ্ব্বাণ লইয়া লক্ষ্মণের সহিত ভীষণ দণ্ডকারণ্যে যাইতেছ। কিন্তু তোমায় যাইতে দেখিয়৷ আমার মন অত্যন্ত চঞ্চল হইতেছে। আমি তোমার কার্য্যকলাপ আলোচনা করিতেছি, তোমার মুখ ও মুখসাধনই বা কি চিন্তু করিতেছি ; চিন্তা করিতে গিয়া পদে পদে বিষম উদ্বেগ উপস্থিত হইতেছে। তুমি যে দণ্ডকারণ্যে যাও, আমার এরূপ ইচ্ছা নহে। তথায় গমন করিলে, নিশ্চয়ই রাক্ষসদিগের সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইবে। কারণ শরাসন সঙ্গে থাকিলে ক্ষত্ৰিয়দিগের তেজ সবিশেষ বৰ্দ্ধিত হইয়া থাকে।” (৩৯)
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/৮৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।