সপ্তম অধ্যায় । orፃ রাক্ষসগণকে বধ করিয়া অরণ্যকে নিরুপদ্রব করা রামের একান্ত কর্তব্য। এইরূপ নানাপ্রকার যুক্তিপ্রদর্শন করিয়া রামচন্দ্র সীতাকে বলিতে লাগিলেন "জানকি, আমি ঋষিগণের রক্ষার ভার গ্রহণ করিয়াছি। সত্যই আমার প্রিয়, আমি স্বীকার করিয়া প্রাণাস্তে অন্যথাচরণ করিতে পারিব না। বরং অকাতরে প্রাণত্যাগ করিতে পারি, লক্ষ্মণের সহিত তোমাকেও পরিত্যাগ করিতে পারি, কিন্তু একবার প্রতিজ্ঞা করিয়া তাহার ব্যতিক্রম করিতে পারি না। প্রার্থনা না করিলেও যাহা করিতাম, অঙ্গীকার করিয়া কিরূপে তাহার বৈপরীত্য আচরণ করিব ? জানকি, তুমি স্নেহ ও সৌহার্দ্যনিবন্ধন যাহা কহিলে, শুনিয়া সন্তুষ্ট হইলাম। অপ্রিয়কে কেহ কখন কিছু কহিতে পারে না। তুমি যেরূপ কুলে উৎপন্ন হইয়াছ, এই বাক্য তাহার ও তোমারও অনুরূপ সন্দেহ নাই। তুমি আমার প্রাণ অপেক্ষাও প্রিয়তম, এক্ষণে আমার এই সঙ্কল্পে অনুমোদন কর।” (৩১০ ) - সীতাদেবীর ধৰ্ম্মসঙ্গত বাক্যে রামের প্রত্যুত্তর যাহাই হউক না কেন, পরম্পরের মধ্যে রাম ও সীতার কিরূপ সম্বন্ধ ছিল, এবং সীতা স্বামীর প্রতি আপনার কর্তব্যগুলি কেমন সুন্দররাপে পালন করিতে যত্নবর্তী ছিলেন, ইহাই বিস্তৃতভাবে প্রদর্শন করিবার নিমিত্ত আমর রামায়ণ হইতে উল্লিখিত কথোপকথনগুলি সংক্ষেপে উদ্ধৃত করিয়া দিলাম। আশা করি, পাঠকপাঠিকাগণ স্বামী স্ত্রীর এই সম্বন্ধটি বিশেষরূপে আলোচনা করিয়া দেখিবেন। রাম স্বরূপ জানকী ও ভ্রাতৃবৎসল লক্ষ্মণের সহিত সেই দণ্ডকারণ্যের নানাস্থল পৰ্য্যটন করিলেন। তাছারা কত আশ্রম, নদ নদী, গিরি গুহা, বন উপবন, পৰল সরোবর দর্শন করিয়া পুলকিত হইতে লাগিলেন ; কোথাও নানাবিধ জলচর ও খেচর পক্ষী, কোথাও যুথবদ্ধ হরিণ, মদোন্মত্ত সগৃঙ্গ মহিষ ও দলবদ্ধ হস্তী, কোথাও ভীষণ বরাহ ও
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/৯১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।