ցԵ. সীতা । শাখারূঢ় বানর, এবং কোথাও বা বিকটাকার রাক্ষস দর্শন করিয়া তাহার হৃদয়মধ্যে কখনও ভয় এবং কখনও বা জাননী অনুভব করিতে লাগিলেন। রামলক্ষ্মণ কত যে ঋষিতপস্বীর সহিত সাক্ষাৎকার করিয়া বিমল প্রতি লাভ করিলেন, সীতাদেবী কত যে ঋষিপত্নী ও ঋষিকন্যার সহিত সদালাপ করিয়া আনন্দিত হইলেন, এস্থলে তাহী বর্ণনীয় নহে। তাহারা কোথাও সম্বৎসর, কোথাও দশ মাস, কোথাও চারি মাস, কোথাও দুই মাস, এবং কোথাও বা তদপেক্ষাও অল্প দিন বাস করিয়া সেই অরণ্যমধ্যেই দশ বৎসর অতিবাহিত করিলেন । এইরূপে দণ্ডকারণ্যপৰ্য্যটন শেষ হইলে, সত্যপ্রতিজ্ঞ রামচন্দ্র মহর্ষি সুতীক্ষের আশ্রমে প্রত্যাগমন করিয়া কিয়দিন সেই স্থলেই সুখে বাস করিতে লাগিলেন। রামচন্দ্র, ভ্রাতা ও পত্নীর সহিত, মহর্ষির আশ্রমে আনন্দে কালযাপন করিতেছেন, সহসা একদিন অগস্ত্যের সহিত সাক্ষাৎকার করিতে র্তাহার ইচ্ছা অতিশয় বলবতী ছইল। মহৰ্ষির আশ্রম তাহার অপরিজ্ঞাত ছিল ; সুতরাং স্বতীক্ষের নির্দেশানুসারে তিনি, লক্ষ্মণ ও সীতা সমভিব্যাহারে, তথায় গমন করিবার সঙ্কল্প করিলেন। সুতীক্ষ্ণ সস্তুষ্ট হইয়া তাহাদিগকে বিদায় দিলেন। তাহারা সেই স্থান হইতে দক্ষিণে চারি যোজন পথ অতিক্রম করিয়া অগস্ত্যের ভ্রাতা মহর্ষি ইষ্মবাহের তপোবনে উপস্থিত হইলেন। এই তপোবন অতিশয় রমণীয়। রাম, ভ্রাতা ও স্ত্রীর সহিত, তথায় রাত্রি যাপন করিয়া পরদিন প্রভাতে অগস্ত্যের আশ্রমাভিমুখে যাত্রা করিলেন। পথে, বনের অপূৰ্ব্ব শোভা দেখিয় তাহার বিস্মিত ও পুলকিত হইতে লাগিলেন। নুনাধিক এক যোজন পথ অতিক্রান্ত হইতে ন হইতেই, অদূরে অগস্ত্যাশ্রম পরিদৃষ্ট হইল। রাম তেজঃপ্রদীপ্ত মহৰ্ষির পবিত্র আশ্রমের গান্তভাব ও শোভা দেখিয়া তৎসন্নিহিত স্থানেই বনবাসের অবশিষ্ট কাল অতিবাহিত করিতে মনস্থ করিলেন।
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/৯২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।