পাতা:সুকান্ত সমগ্র.djvu/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 কিংবা।

 ‘সেখানে আমি ঘন ঘন যেতে লাগলুম।•••ওর আকর্ষণে অবিশ্যি নয়। বাস্তবিক আমাদের সম্পর্ক তখনও অন্য ধরনের ছিল, সম্পূর্ণ অকলঙ্ক, ভাইবোনের মতোই। (পত্রগুচ্ছ)

 কিংবা যে চিঠিতে পার্টি সম্পর্কেও সুকান্ত অভিমান প্রকাশ করেছে।

 এ কি আমাদের সেই একই সুকান্ত? ‘ছাড়পত্র’ আর ‘ঘুম নেই’-এর?

 হ্যাঁ, একই সুকান্ত। কখনও বিষন্ন, কখনও আশায় উন্মুখ। কখনও আঘাতে কাতর, কখনও সাহসে দুর্জয়। কখনও চায় জনতা, কখনও নির্জনতা। কোথাও ভালবাসার কথা মুখ ফুটে বলতেই পারে না, কোথাও ঘৃণায় হুংকার দিয়ে ওঠে।

 সুকান্ত কাগজের মানুষ নয়, রক্তমাংসের মানুষ। তার আত্মবিশ্বাস কখনও কখনও অহমিকাকে স্পর্শ করে, তার যুক্তি কখনও কখনও আবেগে ভেঙে পড়ে।

 সুকান্ত বড় কবি হলেও বয়স তার একুশ পেরোয় নি। তার বেশীর ভাগ লেখাই আরও কম বয়সের।

 ‘সুকান্ত-সমগ্র’ সুকান্তর মহৎ সম্ভাবনাকে মনে কবিয়ে দিয়ে বাংলা সাহিত্যে তার অভাববোধকে নিরন্তর জাগিয়ে রাখবে।

 আমি মাঝে মাঝে ভাবি, বেঁচে থাকলে এতদিনে সুকান্তর এত বছর বয়স হত। কী লিখত সে? কেমন দেখতে হত?

 তখন আমার চোখে তার ছবিটাই বদলে যায়।

৩১ শে শ্রাবণ, ১৩৭৪
সুভাষ মুখোপাধ্যায়