মাছি আর কোথাও উড়ে গেল না। মাছি দেখতে পেল সব প্রাণীব লেজই কাজের জন্যে। বে-দরকারী লেজ কোথাও নেই-বনেও না, নদীতেও না। সে মনে মনে ভাবল-বাড়ি ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। “আমি লোকটাকে সোজা করবই। যতক্ষণ না সে আমায় লেজ করে দেয় আমি তাকে কষ্ট দেব।”
মানুষটি জানলায় বসে বাগান দেখছিল। মাছি তার নাকে এসে বসল। লোকটি নাক ঝাড়া দিল, কিন্তু ততক্ষণে সে তার কপালে গিয়ে ব’সে পড়েছে। লোকটি কপাল নাড়ল -মাছি তখন আবার তার নাকে।
লোকটি কাতর প্রার্থনা জানাল: আমায় ছেড়ে দাও, মাছি।
ভন্ভন্ করে মাছি বলল: কিছুতেই তোমায় ছাড়ব না। কেন তুমি আমায় অকেজো লেজ আছে কি না দেখতে পাঠিয়ে বোকা বানিয়েছ। আমি সব প্রাণীকেই জিগগেস করেছি—তাদের সবার লেজই দরকারী।
লোকটি দেখল মাছি ছাড়বার পাত্র নয়—এমনই বদ এটা। একটু ভেবে সে বলল: মাছি, মাছি! দেখ, মাঠে গরু রয়েছে। তাকে জিগগেস করে তার লেজের কী দরকার।
মাছি জানলা দিয়ে উড়ে গিয়ে গরুর পিঠে বসে ভন্ভন্ করে জিগগেস করল: গরু, গরু! তোমার লেজ কিসের জন্যে? — তোমার লেজ কিসের জন্যে?
গরু একটি কথাও বলল না -একটি কথাও না। তারপর হঠাৎ সে তার লেজ দিয়ে নিজের পিঠে সপাৎ করে মারল আর মাছি ছিটকে পড়ে গেল।
মাটিতে পড়ে মাছির শেষ নিঃশ্বাস বেরিয়ে গেল-পা দুটো উঁচু হয়ে রইল আকাশের দিকে।
লোকটি জানলা থেকে বলল: এ-ই ঠিক করেছে মাছির।