॥ গান॥
ও ভাই, রাখাল ছেলে!
এমন সুরের সোনা বলো কোথায় পেলে।
আমি যে রোজ সাঁঝ-সকালে,
বসে থাকি গাছের ডালে,
তোমার বাঁশির সুরেতে প্রাণ দিই ঢেলে॥
তোমার বাঁশির সুর যেন গো নির্ঝরিণী
তাই শোনে রোজ পিছন হতে বনহরিণী।
চুপি চুপি আড়াল থেকে
সে যায় গো তোমায় দেখে
অবাক হয়ে দেখে তোমায় নয়ন মেলে॥
রাখাল ছেলে অবাক হয়ে দেখে সত্যিই এক দুষ্টু হরিণী লতাগুল্মের আড়াল থেকে মুখ বার করে অনিমেষ নয়নে চেয়ে আছে তার দিকে। সে তাকে বললে:
ওগো বনের হরিণী!
তুমি রইলে কেন দূরে দূরে,
বিভোর হয়ে বাঁশির সুরে,
আমি তো কাছে এসে বসতে তোমায়
নিষেধ করি নি।
হরিণীর ভয় ভেঙে গেল, সে ক্রমে ক্রমে এগিয়ে এল রাখাল ছেলের কাছে। সে তার পাশটিতে এসে চোখে চোখ মিলিয়ে শুনতে লাগল তার বাঁশি। অবোধ বনের পশু মুগ্ধ হল বাঁশির তানে। তারপর প্রতিদিন সে এসে বাঁশি শুনত, যতক্ষণ না তার রেশটুকু মিলিয়ে যেত বনান্তরে।