পাতা:সুকান্ত সমগ্র.djvu/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কিন্তু হরিণীর নিত্যি স্বপনপুরে যাওয়া আর হল না। একদিন এক শিকারী এল সেই বনে। দূর থেকে সে অবাক হয়ে দেখল একটি রাখাল ছেলে বিহ্বল হয়ে বাঁশি বাজিয়ে চলেছে আর একটি বন্য হরিণী তার পাশে দাড়িয়ে তার মুখের দিকে মুগ্ধ হয়ে চেয়ে আছে। কিন্তু শিকারীর মন ভিজল না সেই স্বর্গীয় দৃশ্যে, সে এই সুযোগের অপব্যয় করে বধ করল হরিণীকে। মৃত্যুপথযাত্রী হরিণী তখন রাখাল ছেলেকে বললে- বাঁশিতে মুগ্ধ হয়ে তোমাদের আমি বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু সেই তুমি, বোধহয় মানুষ বলেই, আমার মৃত্যুর কারণ হলে। তবু তোমায় মিনতি করছি:

বাঁশি তোমার বাজাও বন্ধু
আমার মরণকালে,
মরণ আমার আসুক আজি
বাঁশির তালে তালে।
যতক্ষণ মোর রয়েছে প্রাণ
শোনাও তোমার বাঁশরির তান
বাঁশির তরে মরণ আমার
ছিল মন্দ-ভালে।
বনের হরিণ আমি যে গো
কারুর সাড়া পেলে,
নিমেষে উধাও হতাম
সকল বাধা ঠেলে।
সেই আমি বাঁশরির তানে
কিছুই শুনি নি কানে
তাই তো আমি জড়ালেম এই
কঠিন মরণ-জালে॥

২৬৭