পাতা:সুকান্ত সমগ্র.djvu/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অর্থাৎ সাময়িকভাবে, পাঠান সম্ভবপর নয়, কারণ আমার পক্ষে অত্যন্ত ব্যয়সাধ্য। তবে কবিতা পাঠাতে পারি, যা চাস।

 মামাকে২৪ গল্প লিখতে বলেছি, সে লিখে চলেছে; শেষ হলেই পাঠিয়ে দেবে আর মহিলা লেখিকা সংগ্রহ করেছি একজন, তিনি অসুস্থ, সুস্থ হলেই লেখা দেবেন। মহিলা লেখিকা সংগ্রহ করতে গিয়ে এক মজার কাণ্ড করেছিলাম। ব্যাপারটা হচ্ছে, ভূপেনের এক বৌদি আছেন, অত্যন্ত ভালমানুষ। তাকে একদিন এমন চেপে ধরেছিলাম সাঁড়াশির মতো লেখা আদায়ের জন্য, যে তিনি কেঁদে ফেলবার উপক্রম করেছিলেন। কারণ প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে নাছোড়বান্দার মতো ব্যাকুল হয়ে লেখা চাইছিলাম, পরিশেষে পায়ে ধরার যখন আয়োজন করলাম তখন দেখি তার অবস্থা শোচনীয়, কাজেই আখমাড়াই কলের মতো অলেখিকার কাছ থেকে লেখা আদায়ের দুশ্চেষ্টা ছেড়ে দিলাম। তোর ত্রিদিবের দিন দিন উন্নতি হচ্ছে জেনে সুখী হলাম, কিন্তু তার তুলনায় তোর যদি ঐ সঙ্গে ঐ রকম উন্নতি হত তবে আহলাদে আটখানা হতাম। তুই কবিতা লেখা, ছবি আঁকা, এমন কি লেখাপড়া পর্যন্ত ছেড়ে দিলি? তোর চিঠি থেকে অকুমান করা যায় তুই ত্রিদিবের সঙ্গে খুব বেশী জড়িত নোস্। অথচ এত ব্যস্ত কেন? কিছুই বোঝবার উপায় নেই; এ সবের রহস্য এক তুই জনিস আর জানে তোর ত্রিদিব। আমরা মর্ত্যের লোক ত্রিদিবের ব্যাপার কী বুঝব?

 আর একটা ব্যাপারে বিস্মিত ও বিচলিত হলাম, তুই নাকি আমাকে বিভাগীয় সম্পাদক করেছিস? এ ব্যাপারে কিন্তু গোপাল ভাড়ের বাঁশের মাথায় হাড়ি চড়িয়ে ভাত রান্নার গল্প অত্যন্ত অন্যায়ভাবে মনে পড়ে গেল। এর মধ্যে কোনো নতুনতর অভিসন্ধি আছে নাকি? না, এ বন্ধুত্ব বজায় রাখবার অভিনব কৌশল?

 অমূল্যদ্বার শোকে আমিও দুঃখিত হলাম এবং তা মৌখিক নয়।

৩০২