পঁয়ত্রিশ
শ্রদ্ধাস্পদাসু,৫২
মা, প্রথমেই আপনার কাছে ক্ষমা চেয়ে রাখা ভাল। কারণ অপরাধ আমার অসাধারণ—বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আপনার স্বপক্ষে। আর আমার প্রতিবাদ করবার কিছুই যখন নেই, তখন এই উক্তি আপনার কাছে মেলে ধরছি যে, পারিবারিক প্রতিকূলতা আমাকে এখানে আবদ্ধ করে রেখেছে; নইলে আপনার কাছে ক্ষমা চাইবার কোনো প্রয়োজন ছিল না। আমার অপরাধ যে হয়েছে, সেটা অনস্বীকার্য। তবু উপায় যখন নেই, তখন ক্ষমা ভিক্ষা করা ছাড়া আর আমার গতি রইল না। বাড়ির কেউ আমায় এই দুর্দিনে চোখের আড়াল করতে চায় না। অথচ এখানটাও যে নিরাপদ নয়, সেট। ওরা বুঝতে পারে এবং পেরেও বলে, মরতে হলে সবাই একসঙ্গে মরব। কী যুক্তি! আসল ব্যাপার হচ্ছে সমুলে বিনাশ হলেও আমি যেন না এই সংসার-বৃক্ষচ্যুত হই।
“যেখানে যাই সেখানেই দেখি কুগ্রীতা মলিনতা— এক দুর্নিবার গ্লানিতে আমি ডুবে আছি। আপনাকে এত কথা বলছি এর কারণ আপনার কাছে সান্তনা, আশ্বাস চাই বলে; আপনার আশীৰ্বাদ চাই যাতে এই দুষিত আবহাওয়া কাটিয়ে উঠতে পারি। আজকাল আপনাকে খুব বেশী করে—ঠিক এই সময়ে আপনার পবিত্র সান্নিধ্য পেলে আমি নিজেকে এতটা অসহায় মনে করতুম না—এই কথা ভেবে মনে পড়ে। চিঠি লেখার অন্যতম কারণ হচ্ছে এই।
বাস্তবিক, আমি কোথাও চলে যেতে চাই, নিরুদেশ হয়ে মিলিয়ে যেতে চাই “কোঁনো গহন অরণ্যে কিংবা অন্য যে-কোন নিভৃততম প্রদেশে; যেখানে কোনো মানুষ নেই, আছে কেবল সূর্যের আলোর মতো স্পষ্ট-মনা হিংস্র আর নিরীহ জীবেরা, আর অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ। এতোরও দরকার নেই, নিদেনপক্ষে আপনাদের ওখানে যেতে