পারলেও গভীর আনন্দ পেতাম, নিস্কৃতির বন্য আনন্দ; সমস্ত জগতের সঙ্গে আমার নিবিড় অসহযোগ চলছে। এই পার্থিব কৌটিল্য আমার মনে এমন বিস্বাদন এনে দিয়েছে, যাতে আমার প্রলোভন নেই জীবনের ওপর। ...এক অননুভূত অবসাদ আমায় আচ্ছন্ন করেছে। সমস্ত পৃথিবীর ওপর রুক্ষতায় ভরা বৈরাগ্য এসেছে বটে, কিন্তু ধর্মভাব জাগে নি। আমার রচনাশক্তি পর্যন্ত ক্ষীণ হয়ে এসেছে মনের এই শোচনীয় দুরবস্থায়। প্রত্যেককে ক্ষমা করে যাওয়া ছাড়া আজ আর আমার অন্য উপায় নেই। আচ্ছা, এই মনোভাব কি সবার মধ্যেই আসে এক বিশিষ্ট সময়ে?
যাক আর বাজে বকে আপনাকে কষ্ট দেব না। আমার আবার মনে ছিল না, আপনি অমৃস্থ। আপনার ছেলে কি পাবনায় গেছে? তাকে একটা চিঠি দিলাম। সে যদি না গিয়ে থাকে, তবে সেখানা দেবেন এই বলে যে, “এ-খানাই তোমার প্রতি সুকান্তর শেষ চিঠি।”—আচ্ছা, কিছুদিন আগে একখানা চিঠি (Post card) এসেছিল। চিঠিখানার ঠিকানার জায়গায় কাগজ মেরে দেওয়া হয়েছিল আর তার ওপর ঠিকানা লেখ ছিল। সেই চিঠিখানা বেয়ারিং হয়। সেখানা কি আপনাদের কারুর চিঠি? বেয়ারিং করার মুর্খতার জন্য চিঠিটা আমি না-দেখে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম; তবে সেখানা আপনাদের হলে অকুতাপের বিষয়। আমার আপনাদের ওখানে যাবার ইচ্ছা আছে সর্বক্ষণ, তবে সুযোগ পাওয়াই দুষ্কর। আর সুযোগ পেলেই আমায় দেখতে পাবেন আপনার সমক্ষে। চিঠির উত্তর দিলে খুশী হব। না দিলে দুঃখিত হব না। আপনি আমার শ্রদ্ধা গ্রহণ করুন। এখানকার আর সবাই ভাল। ইতি। শ্রদ্ধাবনত—
সর্বাগ্রে আপনার ও অপরের কুশল প্রার্থনীয়। –সুঃ ভঃ