একটি কাগজের ঠোঙায় খানিকটা চাল রহিয়াছে। তুমি হয়তো দাঁড়িপাল্লা দিয়া মাপিয়া বলিলে, “আধ সের চাল।” বৈজ্ঞানিক পণ্ডিতের কাছে যাও, তিনি তাহার চমৎকার দাড়িপাল্লায় ওজন করিয়া বলিবেন, “না, ঠিক আধ সের হয় নি। আরো প্রায় দেড়খানা চাল দিলে তবে ঠিক আধ সের হবে।”
আমরা কথায় বলি “চুল চেরা হিসাব আর মনে করি চুলকে চিরিতে গেলে বুঝি হিসাবটা নিতান্তই সূক্ষরকম হয়। কিন্তু যাঁহারা অণুবীক্ষণ লইয়া কাজ করেন তাহারা বলিবেন, “চুলটা তো একটা দস্তুরমতো মোটা জিনিস। একটা চুলকে হাজারবার চিরলে তবে বলি—“হ্যাঁ, হিসাবটা কতকটা সূক্ষ বটে।” অণুবীক্ষণের সাহায্যে পণ্ডিতেরা যে-সকল সুক্ষ জিনিসের খবর রাখেন, তাহাদের মধ্যে অনেকগুলি এতই সূক্ষম যে তাদের একটার কাছে একটা ছোটো পিঁপড়া যেন ছারপোকার পাশে হাতির মতো দেখায়। এক ইঞ্চিকে একশোভাগ, হাজারভাগ, লক্ষভাগে চিরিয়াও পণ্ডিতদের হিসাবের পক্ষে যথেষ্ট সুক্ষম হয় না। এক চৌবাচ্চা জলের মধ্যে একটা সরিষার মতো ছোটো চিনির টুকরা ফেলিয়া দাও। তাহার এক চামচ জলের মধ্যে যতটুকু চিনি থাকে তাহার চাইতেও অল্প পরিমাণ জিনিস পরীক্ষা করিয়া পণ্ডিতেরা সেই-সব জিনিস সম্বন্ধে অনেক আশ্চর্য খবর সংগ্রহ করিয়াছেন।
খুব তাড়াতাড়ি 'কাট' বলিতে চেষ্টা করতো। কতক্ষণ সময় লাগে? হিসাব করিয়া দেখা গিয়াছে কথাটা শেষ হইতে প্রায় এক সেকেণ্ডের দশভাগের একভাগ সময় লাগে। একটা দুত চলন্ত ট্রেন ততক্ষণে পাঁচ-ছয় হাত চলিয়া যায়। কিন্তু বৈজ্ঞানিক হিসাবীর কাছে সময়ের এ-হিসাবটা খুবই মোটা। ট্রেনটা এক চুল পরিমাণ নড়িতে যতটুকু সময় লাগে সেইটুকু সময়ের মধ্যে যাহা ঘটিতেছে বৈজ্ঞানিক তাহার সন্ধানও রাখিয়া থাকেন। এইখানে হঠাৎ একটা আলো জ্বালিয়া দেখ, আলোক ছুটিয়া চারিদিকে ছড়াইয়া পড়িবে এবং তৎক্ষণাৎ লোকে দেখিবে এই আলো জ্বলিল’? তৎক্ষণাৎ বলিলাম কিন্তু বৈজ্ঞানিক বলিবেন ‘তৎক্ষণাৎ নয়, একটু পরে। ঐ অনেক দূরে যারা রয়েছে তাদের কাছে আলো পৌঁছিতে কিছু সময় চাই তো।' যদি জিজ্ঞাসা করো ‘কতখানি সময় লাগে’ তিনি বলিবেন, “ট্রেনটা যতক্ষণে এক ইঞ্চি যাবে, আলো ততক্ষণে কলকাতা থেকে ছুটে গিয়ে মধুপুরে হাজির হবে।”
উপযুক্ত রকম জল মাটি বাতাস আর সূর্যের আলো পাইলেই গাছেরা বেশ খুশি থাকে, আর তাহাতেই তাহাদের রীতিমতো শরীর পুষ্টি হয় আমরা তো বরাবর এইরকমই দেখি এবং শুনি। তাহারা যে আবার পোকা-মাকড় খাইতে চায়, শিকার ধরিবার জন্য নানারকম অদ্ভুত যদি ঘটাইয়া রাখে এবং বাগে পাইলে পাখিটা ইদুরটা পর্যন্ত হজম