‘চোখ থাকে, সেই দিকে সাড়া দিয়ে বুকে গর্ত করে সেই গর্তের মধ্যে দাঁড়া ঢুকিয়ে খুব মজা করে খায়। আস্ত নারকেলটিকে যে দাড়া দিয়ে ভাঙতে পারে-তার পাঁড়ার একটি চাপটে যে মানুষের হাড় পর্যন্ত ভেঙে দেয় সেটা কিছুই অশ্চির্য নয়। কিন্তু তবু মানুষ তাকে ধরতে ছাড়ে না কারণ এ কাঁকড়া খেতে নাকি অতি চমৎকার। তার পায়ে এত চর্বি যে সেই চর্বি গলিয়ে সেদেশের লোকেরা তেল বার করে রাখে। তার উপর সেদেশের বুননা শুয়োরগুলোরও কেমন বদভ্যাস—তারা গর্ত খুঁড়ে এই কঁকড়াদের বার করে খেয়ে ফেলে।
রাক্ষুসে কাঁকড়ার মতো বড়ো না হলেও, এগুলিও নেহাত ছোটো নয়। একবার এইরকম একটা কাঁকড়াকে একটা মজবুত টিনের বাক্সে বন্ধ করে বাক্সটাকে তার দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরেরদিন দেখা গেল যে, কঁকড়াটা বাক্সের ধার মুচড়িয়ে ফাক করে তা দিয়ে বেরিয়ে পড়েছে।
এক সার্কাসওয়ালার ছেলে-বয়স তার ষোলো বৎসর সে স্কুলের ছুটিতে বাড়ি এসেছিল। সেখানে সে রোজ সিংহের খাঁচার কাছে দাঁড়িয়ে থাকত আর দেখত সিংহকে কেমন করে খেলা শেখায়। যে লোকটা সিংহের খেলা দেখাত, সে একটা সিংহের উপরে ভারি অত্যাচার করত-সিংহটাকে না খাইয়ে, মারধোর করে, গরম লোহার ছ্যাকা দিয়ে সে নানারকমে কষ্ট দিত। দেখে ছেলেটির ভয়ানক রাগ হল; সে তার বাবার কাছে গিয়ে সেই লোকটার নামে নালিশ করল। কিন্তু তার বাবা সে কথা হেসে উড়িয়ে দিলেন। বললেন, “ওরকম না করলে সিংহ কি পোষ মানে?” তার পর, অনেকদিন এই অত্যাচার সয়ে সয়ে একদিন সিংহটা সত্যি সত্যিই ক্ষেপে গিয়ে সেই দুষ্টু খেলোয়াড়কে সাংঘাতিকরকম জখম করে দিল।
তখন সেই ছেলে তার বাবাকে বলল, “কাল থেকে আমি সিংহের খেলা দেখাব।” তার বাবা এ কথা শুনে তাকে দুই ধমক দিয়ে দিলেন। কিন্তু ছেলেরও জেদ কম নয়, পরদিন সকালে দেখা গেল সে বেশ নিশ্চিন্ত হয়ে সিংহের খাঁচায় ঢুকে বসে আছে। প্রথমটা সকলে খবই ভয় পেয়েছিল, কিন্তু ক্রমে দেখা গেল যে, সিংহের সঙ্গে তার এমন ভাব হয়ে গেছে যে ভয়ের কোনো কারণ নেই। এই ছেলে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড়ো ‘জানোয়ারওয়ালা'। এঁর নাম ফ্র্যাঙ্ক বোস্টক।
একটি সিংহ নিয়ে আরম্ভ করে এখন প্রায় চল্লিশটিতে দাঁড়িয়েছে। এক-এক সময়ে পঁচিশ-ত্রিশ বা পঁয়ত্রিশটা সিংহকে একসঙ্গে জড়ো করে তামাশা দেখানো হয়। অবশ্য সিংহগুলি সবই পোষা, কিন্তু তা হলে কি হবে—তবু তো সিংহ। সিংহ কি বাঘ হাজার পোষ মানলেও তাকে ভয় করে চলতে হয়। সামান্য একটু কারণে হঠাৎ একটু ভয় পেলে বা চমকে উঠলে তারা হঠাৎ ক্ষেপে গিয়ে সাংঘাতিক কাণ্ড করে ফেলতে পারে। একবার একজন খেলোয়াড় একটা নতুনরকমের পোশাক পরে খাঁচায় ঢুকেছিল বলে তার সিংহটা