পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিড়, জলের কীট এই-সকল খাইয়া থাকেন। ঝিনুকেরও খাওয়া এইরকমই, তবে তাহারা এক জায়গায় পড়িয়া থাকে বলিয়া তাহাদের আহার জুটিবার সুযোগ কিছু কম। ঝিনুকের খেলায় দুটি করিয়া পাট থাকে, সে দুটিকে তাহারা ইচ্ছামতাে কজা ঘরাইয়া খলিতে ও জুড়িয়া দিতে পারে। খাবারের দরকার হইলে তাহারা সেই দরজা ফাক করিয়া রাখে । চলিতে চলিতে অথবা স্রোতে ভাসিয়া যে-সকল কীট সেই হাঁ-করা মুখের মধ্যে আসিয়া পড়ে তাহাদের সে চটপটু খাইয়া ফেলে। শামুক আর ঝিনুকের খাওয়ার মধ্যে আর-একটি তফাত এই যে, ঝিনুকের দাত নাই, কিন্তু শামুকের দাঁত আছে। দাঁত বলিতে মানুষের দাঁতের মতাে কিছু একটা মনে করিও না। এই সঁাতগুলি তাহাদের জিভের গায়ে অতি সুক্ষভাবে সাজানাে থাকে, এক-একটা শামুকের প্রায় দুই-চারশো বা হাজার-দেড় হাজার পঁতি। অণুবীক্ষণ দিয়া সেই দাঁতালো জিভটিকে কেমন দেখা যায় তাহার একটা নমুনা দেওয়া গেল। উখার মতো


ধারালো এই জিভটিকে সে তাহার খাবারের ভিতরে, উপরে, আশেপাশে ঘঁাশ ঘঁাশ করিয়া চালাইতে থাকে। তাহাতেই খাবার জিনিস সব টুকরা টুকরা হইয়া খাৎলইয়া কাদার মতো নরম হইয়া যায়। ছবিতে যেমন দেখানো হইল, সকলের জিভ ঠিক এইরকম নয় এক-একটার জিভের আগা পর্যন্ত সাংঘাতিক ধারালাে ; সেই জিভ দিয়া তাহারা অন্য জন্তুর গায়ে ফুটা করিয়া দেয়, নিরীহ ঝিনুকগুলির খোলা ফুড়িয়া তাহাদের চুষিয়া খায়। | তার পর শামুক ঝিনুকের চেহারার বাহার যদি বর্ণনা করিতে বসি, তবে তো শেষ করাই মুশকিল হইবে। কত হাজাররকমের শখ, তাদের কতরকম আকার, কতরকম রঙ। তার এক-একটার যে কি আশ্চর্য সুন্দর গড়ন শুধু কথায় তাহা অার কত বোঝানাে যায়। সন্দেশ : চর, ১৩২৪ মাছি আমার সামনে টেবিলের উপর এক টুকরা চান পড়িয়াছিল। একটা মাছি খুব মন দিয়া সেইটাকে পরীক্ষা করিতে আরম্ভ করিয়াছে। চিনির কাছে মুখ রাখিয়া সে অনেকক্ষণ ৩৩৬ সুকুমার সমগ্র রচনাবলী :