পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আবোল তাবোল

এক যে ছিল রাজা—( থুড়ি,
রাজা নয় সে ডাইনিবুড়ি ) !
তার যে ছিল ময়ুর—( না না,
ময়ূর কিসের ? ছাগলছানা ) ।
উঠোনে তার থাকত পোতা—
—( বাড়িই নেই, তার উঠোন কোথা ) ?
শুনেছি তার পিসতুতো ভাই—
—( ভাই নয়তো, মামা-গোসাই ) ।
বলত সে তার শিষ্যটিরে—
—( জন্মবোবা, বলবে কিরে ) !
যাহোক, তারা তিনটি প্রাণী—
—( পাচটি তারা সবাই জানি ) !
থোও না বাপু খ্যাচার্থেচি !
( আচ্ছা বল, চুপ করেছি ) ।
তার পরে সেই সন্ধ্যাবেলা,
যেমনি না তার ওষুধ গেলা,
আমনি তেড়ে জটায় ধরা—
—( কোথায় জটা ? টাক যে ভরা ) !
হোক-না টেকো, হোক-না বুড়ো,
ধরব ঠেসে টটির চুড়ো ;
হোক-না বামুন, হোক-না মুচি,
কাটব তেড়ে–কুচিকুচি
পিটব তারে হাড়ে মাসে,
দে দমাদম আড়ে পাশে।
এখন বাছা পালাও কোথা ?
গল্প বলা সহজ কথা ?

সন্দেশ-জ্যৈষ্ঠ, ১৩২৪


অসম্ভব নয়

এক যে ছিল সাহেব, তাহার
গুণের মধ্যে নাকের বাহার ।
তার যে গাধা বাহন, সেটা
যেমন পেটুক তেমনি ট্যাটা ।
ডাইনে বললে যায় সে বামে
তিন পা যেতে দুবার থামে ।
চলতে চলতে থেকে থেকে
খানায় খন্দে পড়ে বেঁকে ।
ব্যাপার দেখে এমনিতরো
সাহেব বললে “সবুর করো—
মামদোবাজি আমার কাছে ?
এ রোগেরও ওষুধ আছে।”
এই-না বলে ভীষণ ক্ষেপে,
গাধার পিঠে বসল চেপে
মুলোর ঝুট ঝুলিয়ে নাকে ।
—আর কি গাধা ঝিমিয়ে থাকে ?
মুলোর গন্ধে টগ্‌বগিয়ে দৌড়ে
চলে লন্সফ দিয়ে— যতই ছোটে
‘ধরব' বলে ততই মুলো এগিয়ে
চলে খাবার লোভে উদাস প্রাণে
কেবল ছোটে মুলোর টানে—
ডাইনে বায়ে মুলোর তালে
ফেরেন গাধা নাকের চালে ।

কবিতাগুচ্ছ
৩৩