পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তোমার বাড়ি শ্রাদ্ধ নাকি ? ঘরজামাইৰ্টি গেছেন মরে বেজায় বুঝি ভুগেছিল ডেঙ্গু জ্বরে বছর ভরে ? সকলে । বিপদকালে হ্যুপস্থিতে ঠাকুর মোদের যুক্তি দাও ঐ চরণের শরণ নেব মরণ হতে মুক্তি দাও ৷ রহস্পতি । মরবে যে তা আগেই জানি-যেমনতর অনাসৃষ্টি ইন্দ্র তোমার এ সব দিকে একেবারেই নেইকো দৃষ্টি ! কাজে কর্মে নেইকো ছিরি কচ্ছে সবাই যাচ্ছেতাই অমৃত সে ভেজাল গোলা দেবতাগুলো খাচ্ছে তাই । মড়ক সে তো হবেই এতে সদিগমি বেরিবেরি একে-একে মরবে সবাই আর বেশি দিন নেইকো দেরি । হাজার কর ডিসিনফেষ্টো, হাজার কেন ওষুধ গেলো— যাহোক তোমরা যে-যার মতো উইল-পত্র লিখে ফেলো ॥ দেবতা লীলা সাঙ্গ যদি নেহাত যাবে জাহামমে যার যা কিছু দেবার থাকে দাও না লিখে আমার নামে । বীণা হস্তে নারদের প্রবেশ ও গান ও বীণা তুই দেখবি মজা বদ্যি বাজ (তারে না তা মা ) হেন সুযোগ মাগ্যি বড় ও বীণা তোর ভাগ্যি বড় এত মজা আর পাবি না পাগলা বীণা ( তারে না তা না ) নাচি আমি সঙ্গে তোরই, বাহু তুলে রঙ্গ করি তোরে বাজাই আপনি বাজি নাচিয়ে নাচি (তারে না তা না) লাঠালাঠি রক্ত মাটি দেখে লাগে দাঁত কপাটি ও বীণা তুই থাকবি তফাত লাগবে হঠাৎ (তার না তা না) বৃহস্পতি । কি গো ঠাকুর অলুক্ষণে—ঝাড়তে এলে পায়ের ধুলো ? দেখছি এবার হ্যাপায় পড়ে মরবে তবে দেবতাগুলো । নারদ । নাকে ছিপি কানে তুলো ভায়া বড় বিজ্ঞ যে ডিঙোতে চাও টপাট্টপ আমা হেন দিগ্‌গজে । ইন্দ্র ও অশ্বিনীর প্রবেশ ইন্দ্র । শব্দ শুনে দৌড়ে এলাম যুদ্ধ-টুকু লাগল কি ? দৈত্য দেখে ভীষণ ভয়ে দেবতারা সব ভাগল কি ? বৃহস্পতি । ও'র কথা কেউ শুনো নাকো ঠাকুর বড় রগচটা তাই তো ইন্দ্র তোমার হাতে দেখছি না যে বজটা ! ইন্দ্র । বড় সে কি হেথায় আছে, গিয়েছে সে কোন চুলোয় তার বেঁধে তায় কাজে লাগায় মর্ত্যলোকের লোকগুলোয় । নারদ । তোমাদের খুব স্নেহ করি, কাজ কি বলে সবিস্তার এমনি উপায় বাতলে দেব এক্কেবারে পরিষ্কার ॥ 80げ বৃহস্পতি । একটা উপায় আছে বটে—তোমায় সেটা খুলে জানাই হাড় কখানা দাও না মোদের নতুন করে বড় বানাই ! তোমার হাড়ে বড় গড়ে পিটলে পরে দমদম একটি ঘায়ে মরবে না যে সেই ব্যাটারাই নরাধম । শুষ্ক হাড়ে ঘূণ ধরেছে, সূক্ষ্মতর শক্তি তায় জুলবে ভালো হাড়ি তোমার কাজ কি বল বক্ততায় ৷ নারদ । হোৎকামুখো গণ্ডে গোদ আমার উপর টিপুর্নী আমায় তুমি মরতে বল ? মরবে তুমি এক্ষুণি ! আমার ওপর চক্ষ ঠারো ? আমায় বল কুন্দুলে মুখে মাখ জুতোর কালি-গালে লাগাও চুন গুলে। কাতিকের প্রবেশ কাতিক । আমায় সবাই মাপ করো ভাই, হয়ে গেল আসতে দেরি হিসেব-মতো পছন্দসই হচ্ছিল না চোস্ত টেরি } গোফ জোড়াটা মেপে দেখি ডাইনে একটু গেছে উঠে লাগল দেরি সামলে নিতে টেনেটুনে হেঁটেছুটে । চাকর ব্যাটা খেয়ালশূন্য কাজে কর্মে ঢিলে দিয়ে শেষ মুহ,র্তে কাপড়খানা কুচিয়ে দিল গিলে দিয়ে ৷ মারদ । তুমিই এখন ভরসা এদের তুমিই এদের কর্ণধার তুমিই এদের ত্রাণ কর ভাই নইলে সবই অন্ধকার । বলছি এদের বারে-বারে নেই রে উপায় যুদ্ধ বই তোমরা সবাই হটলে এখন কোথায় আমি মুখ লুকাই ? কাতিক । লড়াই করে মরতে যাব আর তো আমার সেদিন নয় কারে তুমি হুকুম কর শর্মা কারো অধীন নয় । যে কয়জনা যুদ্ধে যাবেন ফিরবে না তার অর্ধেকও তল্পিতল্পা বাধ রে ভাই থাকতে সময় পথ দেখ । ১ । আমি বলি ঢের হয়েছে শান্তি বাদ্য পিটিয়ে দাও হাঙ্গামাতে কাজ কি বাপু আপোস করে মিটিয়ে মাও । ২ । শাস্ত্রে বলে শোনরে চাচা আপনা বাঁচা আগে ভাগে— পিটি খেয়ে মরবি কেন থাকলে দেহ কাজে লাগে । ৩ । কিসের দাদা স্বর্গভূমি কিসের পুরী পাচতলা দৈত্য যখন ধরবে ঠেসে করবে তুমি কাচকলা । ৪ । ত্যাগ কর ভাই মিথ্যে মায়া ত্যাগ কর এ স্বৰ্গধাম আর তো সবই ছাড়তে পার প্রাণটুকুরই বড় দাম । মারদ ।* কিসের এত ভাবনা তোদের মিথ্যে এত কিসের ডর মুক্তি করে দেখু না ভেবে ঠাণ্ডা হয়ে হিসেব কয় । না হয় দুটো খসবে মাথা না হয় দুটো ভাঙত ঠ্যাং তাই বলে কি সুকবি ভয়ে কুয়োর মধ্যে জ্যান্ত ব্যাঙ। সুকুমার সমগ্র রচনাবলী : 4