আড়াল করল।
সবাই তখন খুঁজে সারা—‘কোথায় গেল, কোথায় গেল?’ একজন পরী বলে উঠল, “ঐ ওখানে—জলের নীচে।” তানে বললেন, “বটে! মাতারিকিকে লুকিয়ে রেখেছ কে?” রাজার মেয়ের বুকের মধ্যে দুর দুর করে কেঁপে উঠল—কিন্তু তিনি কোন কথা বললেন না। তখন তানে বলল, “আচ্ছা দাঁড়াও। আমি এর উপায় করছি।” তখন সে জলের ধারে নেমে এসে, হাজার গাছের শিকড় মেলে শোঁ শোঁ করে জল টানতে লাগল।
মাতারিকি জল ঝেড়ে উঠে আসল। জলের নীচে আরামে শুয়ে তার পরিশ্রম দূর হয়েছে, এখন তাকে ধরবে কে? আকাশময় ছুটে ছুটে কাহিল হয়ে সবাই বলছে, “আর হলো না।” তানে তখন রেগে বলল, “হতেই হবে।” এই বলে হঠাৎ সে পথের পাশের একটা মস্ত তারা কুড়িয়ে নিয়ে, মাতারিকির হাতের দিকে ছুঁড়ে মারল।
ঝন ঝন করে শব্দ হল, মাতারিকি হায় হায় করে কেঁদে উঠল, তার এতদিনের সাধের তারা সাত টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ল। তানে তখন দৌড়ে এসে সেগুলোকে দুহাতে করে ছিটিয়ে দিলেন আর বললেন, “এখন থেকে দেখুক সবাই—আমার গাছের কত বাহার।” দুষ্টু পরীরা হো হো করে হাসতে লাগল।
এখনো যদি দখিন হাওয়ার দেশে যাও, দেখবে সেই ভাঙা তারার সাতটি টুকরো আকাশের নীচে একই জায়গায় ঝিকমিক করে জ্বলছে। ঘুমের আগে রাজার মেয়ে এখনও তার ছায়ার সঙ্গে খেলা করে। আর জোছনা রাতে দখিন হাওয়ায় মাতারিকির দীর্ঘনিশ্বাস শোনা যায়।
লোলির পাহারা
শহর থেকে অনেক দরে ‘লোলি’দের বাড়ি। সে বাড়িতে খালি লোলি থাকে, আর তার বাবা থাকেন, আর থাকে একটা বড়ো শুওর। বাড়ির চারদিকে ছোট ছোট খেত, তার চারদিকে বেড়া দিয়ে ঘেরা। খেতে যে সামান্য ফসল হয়, তাই বেচবার জন্য লোলির বাবা শহরে যান, আর লোলিকে বলে যান, “তুই বাড়িতে থেকে ভালো করে পাহারা দিস্।” লোলি বাড়িতেই থাকে, কিন্তু পাহারা দেয় বিছানায় শুয়ে চোখ বুজে, নাক ডাকিয়ে!
একদিন লোলির বাবা শহরে যাবার সময়ে লোলিকে বললেন, “ওরে! আমার তো আজকেও ফিরতে সন্ধে হবে, একটু ভালো করে মন দিয়ে পাহারা দিস্। কশাইবুড়ো বলেছিল শুওরটাকে কিনবে—তা হলেই শীতকালটা আমাদের কোনরকমে চলে যাবে। দেখ বাপু, ফটকটি খোলা রেখো না যেন! শুওরটা যদি পালায়,