সেইরকম চোখা চোখা নাক আর মিটমিটে কালো কালো চোখ। দুজনের উৎসাহ আর ধরে না! টপাটপ, টপাটপ খাচ্ছে আর তাদের ভাষায় কেবলি বলছে, “এটা খাও ওটা খাও! এটা কি সুন্দর। ওটা কেমন চমৎকার।” এমনি করে দেখতে দেখতে জন্মদিনের যত খাবার সব চেটেপটে শেষ!
সকালবেলায় খুকি উঠে দেখলো—ওমা! কি আশ্চর্য! সব খাওয়া শেষ হয়ে গেছে! কখন যে পুতুলগুলো জেগে উঠলো, কখন যে খেল আর কখন যে আবার ঘুমোল, কিছুই সে টের পায় নি। “খেয়েছে! খেয়েছে! সব খাবার খেয়েছে!” বলে সে এমন চেঁচিয়ে উঠলো যে মা, বাবা, ছোড়দা, বড়দা, সবাই ছুটে এসে হাজির।
ব্যাপার দেখে আর খুকির কথা শুনে সবাই বলল, “তাইতো! কি আশ্চর্য!” খালি ছোড়দা বলল, “তা বৈকি! ও নিজে খেয়ে এখন বলছে—পুতুলে খেয়েছে।” দেখ তো কি অন্যায়!
আসলে ব্যাপারটা যে কি, তা কেবল মা জানেন আর বাবা জানেন, কারণ তাঁরা ঘরের কোণে ইঁদুরের ছোট-ছোট পায়ের দাগ দেখেছিলেন। কিন্তু সে কথা খুকিকে যদি বল, সে কক্ষনো তোমার কথা বিশ্বাস করবে না।
হিংসুটি
এক ছিল দুষ্টু মেয়ে—বেজায় হিংসুটে, আর বেজায় ঝগড়াটে। তার নাম বলতে গেলেই তো মুশকিল, কারণ ঐ নামে সন্দেশের শান্ত লক্ষ্মী পাঠিকা যদি কেউ থাকেন, তাঁরা তো আমার উপর চটে যাবেন।
হিংসুটির দিদি বড় লক্ষ্মী মেয়ে—যেমন কাজে কর্মে তেমনি লেখা পড়ায়। হিংসুটির বয়স সাত বছর হয়ে গেল, এখনো তার প্রথম ভাগই শেষ হল না—আর তার দিদি তার চাইতে মোটে এক বছরের বড়—সে এখনই ‘বোধোদয়’ আর ‘ছেলেদের রামায়ণ’ প’ড়ে ফেলেছে। ইংরিজি ফার্স্টবুক তার কবে শেষ হয়ে গেছে। হিংসুটি কিনা সবাইকে হিংসে করে, সে তার দিদিকেও হিংসে করতো। দিদি স্কুলে যায়, প্রাইজ পায়—হিংসুটি খালি বকুনি খায় আর শাস্তি পায়।
দিদি সেবার ছবির বই প্রাইজ পেলে, আর হিংসুটি কিচ্ছু পেলে না, তখন যদি তার অভিমান দেখতে! সে সারাটি দিন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে গাল ফুলিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে বসে রইল—কারো সঙ্গে কথাই বলল না। তারপর রাত্রি বেলায় দিদির অমন সুন্দর বইখানাকে কালি ঢেলে মলাট ছিঁড়ে কাদায় ফেলে নষ্ট করে দিল। এমন দুষ্টু হিংসুটে মেয়ে!
হিংসুটির মামা এসেছেন, তিনি মিঠাই এনে দু বোনকেই আদর করে খেতে