শুনে বুঝতে পারলেন যে, লোকটাও সঙ্গে সঙ্গে ছুটছে! এ কিন্তু ডাকাত না হয়ে যেতেই পারে না! হারুবাবুর হাত-পা সব ঠাণ্ডা হয়ে আসতে লাগল, কপালে বড়-বড় ঘামের ফোঁটা দেখা দিল। এমন সময়ে হঠাৎ শোনা গেল, সামনে ঘাটের পাশে বসে কারা যেন গল্প করছে।
শুনবামাত্র হারুবাবুর মনে সাহস হল। তিনি ধাঁ করে ছাতা বাগিয়ে সিংহবিক্রমে ফিরে বললেন, “তবে রে! আমি টের পাই নি বুঝি? ভালো চাস তো—”
কিন্তু লোকটির চেহারা দেখে হঠাৎ তাঁর বক্তৃতার তেজ থেমে গেল। অত্যন্ত নিরীহ, রোগা ভালোমানুষ গোছের লোকটি—ডাকাতের মতো একেবারেই নয়!
হারুবাবু তখন একটু নরম মতন ধমক দিয়ে বললেন, “খামাখা আমার পেছন পেছন ঘুরছ কেন হে?” লোকটি অত্যন্ত ভয় পেয়ে আর থতমত খেয়ে বলল, “স্টেশনের বাবুটি যে বললেন, আপনি বলরামবাবুর পাশের বাড়িতেই থাকেন, আপনার সঙ্গে গেলেই ঠিকমত পৌঁছব।—তা আপনি কি বরাবর এইরকম করে বেঁকেচুরে চলেন নাকি?” হারুবাবু ঠিক এক মিনিট হাঁ করে তাকিয়ে থেকেও বলবার মতো কোন জবাব খুঁজে পেলেন না। কাজেই ঘাড় হেঁট করে আবার সোজা পথে বাড়ি ফিরে চললেন।