মাথায় চাদর ঢেকে ধামার কাছে বসে খানিকক্ষণ ঢকঢক শব্দ করে বললেন, “ব্যস! শরবতের দফা শেষ।” সবাই বলল, “কই দেখি?” বলে যেই তারা ধামা তুলেছে অমনি মামা খপ করে গেলাস নিয়ে চোঁ চোঁ করে শরবৎ খেয়ে বললেন, “কেমন! ধামা ধরলাম না, ছুঁলাম না, শরবৎ খেয়ে ফেললাম! হল তো?
ঠকানে প্রশ্নের উত্তর
গাধা দুইটা মুখোমুখিই দাঁড়াইয়া ছিল। তাহা হইলেই একটার মুখ পূর্বদিকে থাকিলে আর একটার মুখ তাহার উল্টা, অর্থাৎ পশ্চিমদিকে থাকিবে। এখন দুইজনের মাঝখানে মুখের নীচে খাবারের বালতি বসাইলেই দুইজনে একসঙ্গে খাইতে পারে।
শতরঞ্চির উপর হইতে কৌটা সরাইবার কৌশলটিও খুব সহজ। শতরঞ্চির উপর ভর না দিয়া তাহার উপর হাত পা না রাখিয়াও তাহাকে গুটাইয়া ফেলা যায়; আর একদিকে খানিকটা গুটাইলেই কোটাটি উঠাইয়া লওয়া সহজ হয়।
রামবাবু লোকটি যেমন কৃপণ, তাঁর প্রতিবেশী বৃন্দাবনচন্দ্রের আবার তেমনি হাত খোলা। দুজনের মধ্যে বহুকালের বন্ধুতা, অথচ কি চেহারায়, কি স্বভাবপ্রকৃতিতে কোথাও দুজনের মিল নেই। বৃন্দাবন বেঁটেখাটো গোলগাল গোছের মানুষ, তাঁর মাথাভরা টাক, গোঁফদাড়ি সব কামানো। ছাপ্পান্ন বছর অতি প্রশংসার সঙ্গে রেজিস্ট্রি অফিসে চাকরি করে শেষদিকে তাঁর খুব পদোন্নতি হয়েছিল। এখন ষাট বছর বয়সে তিনি সবেমাত্র পেনসন নিয়ে বিশ্রাম করছেন। তিনি, তাঁর গিন্নি, আর এক বুড়ো জ্যাঠামশাই, এছাড়া ত্রিসংসারে তাঁর আর কেউ নেই। জ্যাঠামশাই বিয়েটিয়ে করেন নি, বৃন্দাবনের সঙ্গেই থাকেন।
রামপ্রসাদ সান্ন্যাল লোকটি ছিপছিপে লম্বা। পোস্টমাস্টার প্রাণশংকর ঘোষ ছাড়া তেমন ঢ্যাঙা লোক সে পাড়াতে আর খুঁজে পাবে- না। এক অক্ষর ইংরেজি জানেন না, কিন্তু মার্বেল পাথর আর পাটের তেলের ব্যবসা করে তিনি প্রকাণ্ড দোতলা বাড়ি করেছেন, দেশে জমিদারি কিনেছেন আর নানারকম কারখানার অংশীদার হয়ে বসেছেন। তাঁর আটটি ছেলে, কিন্তু মেয়ে একটিও হল না বলে তাঁর ভারি দুঃখ। প্রকাণ্ড কপাল, তার ওপর একরাশ কাঁচাপাকা চুল, মুখে লম্বা লম্বা দাড়ি আর