সকলের অভিবাদন পন্ডিত। আসন, আসন—আমাদের ন্যায়শাস্ত্রে বলেছে নরানাং মাতুলক্ৰমঃ । আপনার ভাগেনটি—আহা! অতি চমৎকার লোক। আমাদের ন্যায়শাস্ত্রে বলেছে— দলিরাম । নাঃ! আবার ন্যায়শাস্ত্র শুরু করল ! খে’টরাম। চল আমরা একট ঘরে আসিগে । কেদার। এই লোক দুটোর চেহারা তো বড় সবিধের নয়— পন্ডিত। তা সবিধের হবে কোথেকে—হাজার হোক ছোটলোক। আমাদের ন্যায়শাসের বলেছে--মিস্টান্নমিতরে জনাঃ । আপনার ভাগ্নে তো কাউকে কিছর বলেন না—তাই ওরা আসকোরা পেয়ে গেছে। এমনি বেয়াদবী করে—কি বলব! কেদার। বটে। তা আপনারা প্রতিকার করেন না কেন ? পন্ডিত। কি করি বলন? আপনারা থাকতে আমার তো কিছু বলা উচিত হয় না। কেদার। এক কাজ করন, এর পর যদি কিছল বাড়াবাড়ি করে, ঘাড়টি ধরে বার করে দেবেন। পণ্ডিত। হ্যাঁ, হ্যাঁ, তাই তো করা উচিত। আমাদের ন্যায়শাপে বলেছে—যা শত্র পরে পরে। কেদার। আহা আপনার সঙ্গে কথা কয়েও সুখ আছে—কি পাণ্ডিত্য ! আবার কি মিন্ট স্বভাব! আমার এই ক'টা লেখা আছে, এগুলো আপনাকে একটা শোনাই—এমন সমজদার লোক তো আর সচরাচর জোটে না ! কেদারকৃষ্ণের পাঠ অমানিশার গভীর তমসাজাল ভেদ করিয়া ঐ পর্বদিকে তরুণ তপন ধীরে-ধীরে উকি মারছে। বিহঙ্গের কলকল্লোলে, শিশিরসিক্ত বায়রে হিল্লোলে দিগদিগন্ত আমোদিত মুখরিত উচ্ছসিত হইয়া, আহা, সবভাবের সেই শোভা ভারি চমৎকার হয়েছে! হে নিদ্রিত ২৩২ মানব সকল! ঐ শনো বাছরগুলি ল্যাজ তুলিয়া হামবা-হাবা রবে ছয়টিতেছে, তোমরা উত্তিষ্ঠত জাগ্রত। আহা; কবিরা তো সত্যই বলিয়াছেন, “পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল—” পণ্ডিত। চমৎকার হয়েছে! আমার একটা কাজ আছে—এক্ষুনি যেতে হবে। কেদার। একটা দাঁড়ান, এই জায়গাটা ভারি ইন্টারেস্টিং : কেদারকৃষ্ণের পনরায় পাঠ দিন নেই, রাত নেই, সকাল নেই, বিকাল নেই, রোদ নেই, বটি নেই, শীত নেই, গ্রীষ্ম নেই —কেবল সেই এক কথা, সেই এক চিন্তা, সেই এক কল্পনা, এক জলপনা, এক তন্ত্র, এক মন্ত্র -কেমন ?—সমদ্রের ফেনিলাম্ববরোশি নীলা-বরাভিমুখে নত্য করিতে-করিতে নিত্যনবোৎসাহে—কেমন? ভাষার কেমন একটা সহজ ভঙ্গি আছে সেইটা লক্ষ্য করেছেন ?— সমদ্রের ফেনিলাব রাশি নীলা-বরাভিমুখে নত্য করিতে-করিতে নিত্য নবোৎসাহে সেই একই সরে, সেই একই ছন্দ, সেই একই সংগীতকে ধৰনিত প্রতিধৰনিত করিয়া তুলিতেছে—তাহার শেষ নাই, অন্ত নাই, বিরাম নাই, বিশ্রাম নাই, ক্ষান্তি নাই, বিচ্ছেদ নাই— পন্ডিত। দাঁড়ান, আমার বড় তাড়াতাড়ি—ধাঁ করে এক্ষুনি আসব। পণ্ডিতের প্রস্থান কেদার। হ্যাঁ, একেবারে ব্রহ্মাস্ত্র ঝেড়ে দিয়েছি—আচ্ছা, আবার ঘরে আসকে— হাড় জবালিয়ে ছাড়ব ! কেদারকৃষ্ণের প্রপথান নেপথ্যে খোটরাম ও দলিরামের কন্ঠস্বর খে’টরাম। দেখ, চোরের দশদিন আর সাধার ७कर्गमन । দলিরাম। হ্যাঁ, হ্যাঁ, তুই তো সবই করবি, झा ! था ! সকুমার সমগ্র রচনাবলী
পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/২৩৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।