কুম্ড়োপটাশ
(যদি) কুম্ড়োপটাশ নাচে—
খবরদার এসো না কেউ আস্তাবলের কাছে;
চাইবে নাকো ডাইনে বাঁয়ে চাইবে নাকো পাছে;
চার পা তুলে থাকবে ঝুলে হট্টমূলার গাছে!
(যদি) কুম্ড়োপটাশ কাঁদে—
খবরদার! খবরদার! বসবে না কেউ ছাদে;
উপুড় হয়ে মাচায় শুয়ে লেপ কম্বল কাঁধে;
বেহাগ সুরে গাইবে খালি ‘রাধে কৃষ্ণ রাধে’!
(যদি) কুম্ড়োপটাশ হাসে—
থাকবে খাড়া একটি ঠ্যাঙে রান্নাঘরের পাশে;
ঝাপ্সা গলায় ফার্সি কবে নিশ্বাসে ফিস্ফাসে;
তিনটি বেলা উপোস করে থাকবে শুয়ে ঘাসে!
(যদি) কুম্ড়োপটাশ ছোটে—
সবাই যেন তড়বড়িয়ে জানলা বেয়ে ওঠে;
হুঁকোর জলে আলতা গুলে লাগায় গালে ঠোঁটে;
ভুলেও যেন আকাশ পানে তাকায় না কেউ মোটে!
(যদি) কুম্ড়োপটাশ ডাকে—
সবাই যেন শাম্লা এঁটে গামলা চড়ে থাকে;
ছেঁচকি শাকের ঘণ্ট বেটে মাথায় মলম মাখে;
শক্ত ইঁটের তপ্ত ঝামা ঘষতে থাকে নাকে!
তুচ্ছ ভেবে এ-সব কথা করছে যারা হেলা,
কুম্ড়োপটাশ জানতে পেলে বুঝবে তখন ঠেলা।
দেখবে তখন কোন্ কথাটি কেমন করে ফলে,
আমায় তখন দোষ দিও না, আগেই রাখি বলে।
পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।