দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম
ছুট্ছে মোটর ঘটর্ ঘটর্ ছুট্ছে গাড়ী জুড়ি;
ছুট্ছে লোকে নানান্ ঝোঁকে করছে হুড়োহুড়ি;
ছুট্ছে কত ক্ষ্যার মত পড়্ছে কত চাপা—
সাহেব মেম থম্কে থেমে বলছে “মামা! পাপা!”
আমরা তবু তবলা ঠুকে গাচ্ছি কেমন তেড়ে।
“দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম! দেড়ে দেড়ে দেড়ে!”
বর্ষাকালের বৃষ্টিবাদল রাস্তা জুড়ে কাদা,
ঠাণ্ডা রাতে সর্দিবাতে মরবি কেন দাদা?
হোক্ না সকাল হোক্ না বিকেল
হোক্ না দুপুর বেলা,
থাক্ না তোমার আফিস যাওয়া
থাক্ না কাজের ঠেলা―
এই দেখ না চাঁদ্নি রাতের গান এনেছি কেড়ে,
“দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্! দেড়ে দেড়ে দেড়ে!”
মুখ্যু যারা হচ্ছে সারা পড়ছে ব’সে একা,
কেউ-বা দেখ কাঁচুর মাচুর
কেউ বা ভ্যাবাচ্যাকা;
কেউ বা ভেবে হদ্দ হল, মুখটি যেন কালি;
কেউ বা ব’সে বোকার মত মুণ্ডু নাড়ে খালি।
তার চেয়ে ভাই, ভাবনা ভুলে গাও না গলা ছেড়ে,
“দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্! দেড়ে দেড়ে দেড়ে!”
বেজার হয়ে যে যার মত কর্ছ সময় নষ্ট,
হাঁট্ছ কত খাট্ছ কত পাচ্ছ কত কষ্ট!
আসল কথা বুঝছ না যে, করছ না যে চিন্তা,
শুনছ না যে গানের মাঝে তব্লা বাজে ধিন্তা?
পাল্লা ধ’রে গায়ের জোরে গিটকিরি দাও ঝেড়ে,
“দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্! দেড়ে দেড়ে দেড়ে!”
পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/৫৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৪৮
সুকুমার রায় রচনাবলী