পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/৬৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



ঠিকানা

আরে আরে জগমোহন—এস,এস,এস—
বল্‌তে পার কোথায় থাকে আদ্যানাথের মেসো?
আদ্যানাথের নাম শোন নি? খগেনকে তো চেনো?
শ্যাম বাগ্‌চি খগেনেরই মামাশ্বশুর জেনো।
শ্যামের জামাই কেষ্টমোহন, তার যে বাড়িওলা—
(কি যেন নাম ভুলে গেছি), তারই মামার শালা;
তারই পিসের খুড়তুতো ভাই আদ্যানাথের মেসো,
লক্ষ্মী দাদা, ঠিকানা তার একটু জেনে এসো।
ঠিকানা চাও? বলছি শোন; আমড়াতলার মোড়ে,
তিন-মুখো তিন রাস্তা গেছে, তারি একটা ধ’রে
চল্‌বে সিধে নাকবরাবর, ডানদিকে চোখ রেখে,
চল্‌তে চল্‌তে দেখবে শেষে রাস্তা গেছে বেঁকে।
দেখবে সেথায় ডাইনে বাঁয়ে পথ গিয়েছে কত,
তারি ভিতর ঘুরবে খানিক গোলকধাঁধার মতো।
তার পরেতে হঠাৎ বেঁকে ডাইনে মোচড় মেরে,
ফিরবে আবার বাঁয়ের দিকে তিনটে গলি ছেড়ে।
তবেই আবার পড়বে এসে আমড়াতলার মোড়ে,
তার পরে যাও যেথায় খুশি, জ্বালিয়ো নাকো মোরে।


গল্প বলা





“এক যে রাজা”—“থাম্ না দাদা,
রাজা নয় সে, রাজ পেয়াদা।”
“তার যে মাতুল”—“মাতুল কি সে?
সবাই জানে সে তার পিসে।”
“তার ছিল এক ছাগল ছানা”—
“ছাগলের কি গজায় ডানা?”
“একদিন তার ছাতের ’পরে”—
“ছাত কোথা হে টিনের ঘরে?”
“বাগানের এক উড়ে মালী”—
“মালী নয়তো! মেহের আলি”—
“মনের সাধে গাইছে বেহাগ,”
“বেহাগ তো নয়! বসন্ত রাগ।”




“থও না বাপু ঘ্যাঁচা ঘেঁচি”—
“আচ্ছা বল, চুপ করেছি।”
“এমন সময় বিছ্না ছেড়ে,
হঠাৎ মামা আস্‌ল তেড়ে,
ধর্‌ল সে তার ঝুঁটির গোড়া—“
“কোথায় ঝুঁটি? টাক যে ভরা।”
“হোক না টেকো, তোর তাতে কি?
লক্ষ্মীছাড়া মুখ্যু ঢেঁকি!
ধর্‌ব ঠেসে টুঁটির ’পরে,
পিটব তোমার মুণ্ডু ধ’রে—
কথার উপর কেবল কথা,
এখন বাপু পালাও কোথা?”





আবোল তাবোল
৫৯