পাতা:সুরুচির কুটীর - দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ । - s আমার অভিলাষ পূৰ্ণ হইবে । এই সঙ্কল্প করিয়া সুরেশ ফলিকাতা অভিমুখে যাত্রা করিল। তাহার পথ-খরচের জন্য কেবল দুই টাকা মাত্র সম্বল ছিল। কলিকাতা পৰ্য্যন্ত সমুদয় পথ তাহাকে হাঁটিয়া আসিতে হইল। পদচারণায় সুরেশের তেমন পটুতাছিল না, সুতরাং কলিকাতায় আসিয়া পহুছিতে তাহার পনর ঈ দিন সময় লাগিল। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যেও তাহার পাথেয় স্বরূপ এক পয়সা ব্যয় হয় নাই । তাহার পরিধেয় বস্ত্রের অঞ্চলে যে দুই টাকা ছিল, তাহ অক্ষত বহিয়াছে। সুরেশ গৃহস্থের বাড়ীতে অতিথি হইয়া দুবেল আহার করিত। খেয়া নৌকার পারানি পৰ্যন্ত তাহাকে দিতে হয় নাই। নৌকায় পার হইবার কালে পথিকেরা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করিয়া থাকে, কে কোথায় যাইবে । সুতরাং খেয়া নৌকায় সুবেশকেও আপন গন্তব্য স্থানের পরিচয় দিতে হইত। একজন ষোড়শ বর্ষীয় বালক একাকী পদব্ৰজে কলিকতাত যাইতেছে, শুনিয়া সকলেই অবাক হইত । তাহার এমন দুঃসঙ্কল্পের কারণ কি, অনেকেই জিজ্ঞাসা করিত। নিম্প্রয়োজনে পথিকের নিকট আত্ম দুৰ্গতির পরিচয় দিতে সুরেশের প্রারক্তি হইত না । তাহার অনিচ্ছা দেখিয়া লোকে আরও আগ্রহ প্ৰকাশ করিত, না বলিলে বিরক্ত হইত ও তিরস্কার করিত । ক যেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাহাকে আত্ম জীবনের কাহিনী জ্ঞাপন করিতে হইত। এমন বালকের এত দুৰ্গতির কথা শুনিয়া সকলেই তাহার দুঃখে দুঃখিত হইত। ভদ্রনামাজের শিরোভূষণের ইতর লোকদিগকে যত কঠিন হৃদয়ী বলিয়া থাকেন, বস্তুতঃ তাহাদিগের হৃদয় তত কঠিন নছে ; অনেক বাকপটু সুশিক্ষিতের ন্যায় তাহাদিগের মুখ-ভারতী কারিবার ক্ষমতা না থাকিলেও হৃদয় আছে ; প্রকৃত দুঃখের কথা শুনিলে তাহাদিগের হৃদয় বিলক্ষণ দ্রব হইয়া থাকে। কোন R