পাতা:সেঁজুতি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সেঁজুতি

সামান্য ছুতায়
ঘরের বিবাদ গ্রামের শত্রুতায়
গুপ্ত চালের লড়াই যেত লেগে,
শক্তিমানের উঠত গুমর জেগে।
হার্‌ত যে তার ঘুচত পাড়ায় বাস,
ভিটেয় চলত চাষ।
ধর্ম ছাড়া কারো নামে পাড়বে যে দোহাই
ছিল না সেই ঠাঁই।
ফিস্‌ফিসিয়ে কথা কওয়া সংকোচে মন ঘেরা,
গৃহস্থবৌ, জিব কেটে তার হঠাৎ পিছন-ফেরা;
আলতা পায়ে, কাজল চোখে, কপালে তার টিপ,
ঘরের কোণে জ্বালে মাটির দীপ।
মিনতি তার জলেস্থলে, দোহাই-পাড়া মন,
অকল্যাণের শঙ্কা সারাক্ষণ।
আয়ুলাভের তরে
বলির পশুর রক্ত লাগায় শিশুর ললাট ’পরে।
রাত্রিদিবস সাবধানে তার চলা,
অশুচিতার ছোঁয়াচ কোথায় যায় না কিছুই বলা।
ওদিকেতে মাঠে বাটে দস্যুরা দেয় হানা,
এদিকে সংসারের পথে অপদেবতা নানা।
জানা কিংবা না-জানা সব অপরাধের বোঝা,
ভয়ে তারি হয় না মাথা সোজা।

৩৫