পাতা:সেঁজুতি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সেঁজুতি

এরি মধ্যে গুন্‌গুনিয়ে উঠল কাহার স্বর-
“এপার গঙ্গা ওপার গঙ্গা, মধ্যিখানে চর।”


সেদিনো সেই বইতেছিল উদার নদীর ধারা,
ছায়া-ভাসান দিতেছিল সাঁজ সকালের তারা।
হাটের ঘাটে জমেছিল নৌকো মহাজনী,
রাত না যেতে উঠেছিল দাঁড়-চালানো ধ্বনি।
শান্ত প্রভাত কালে
সোনার রৌদ্র পড়েছিল জেলেডিঙির পালে।
সন্ধ্যেবেলায় বন্ধ আসা-যাওয়া,
হাঁসবলাকার পাখার ঘায়ে চমকেছিল হাওয়া।
ডাঙায় উনুন পেতে
রান্না চড়েছিল মাঝির বনের কিনারেতে।
শেয়াল ক্ষণে ক্ষণে
উঠতেছিল ডেকে ডেকে ঝাউয়ের বনে বনে


কোথায় গেল সেই নবাবের কাল,
কাজির বিচার, শহর কোতোয়াল।
পুরাকালের শিক্ষা এখন চলে উজান-পথে,
ভয়ে-কাঁপা যাত্রা সে নেই বলদটানা রথে।

৩৬