পাতা:সেঁজুতি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সেঁজুতি

ঊর্ধ্বে কালাে আকাশের ফাঁকা
ঝাঁট দিয়ে, চলে গেল বাদুড়ের পাখা।
যেন সে, নির্মম
অনিশ্চিত-পানে-ধাওয়া অদৃষ্টের প্রেতচ্ছায়াসম।
বৃদ্ধবট মন্দিরের ধারে,
অজগর অন্ধকার গিলিয়াছে তারে।
সদ্য মাটিকাটা পুকুরের
পাড়ি ধারে বাসা বাঁধা মজুরের
খেজুরের পাতা-ছাওয়া, ক্ষীণ আলাে করে মিট্‌ মিট্‌,
পাশে ভেঙেপড়া পাঁজা। তলায় ছড়ানাে তার ইঁট।
রজনীর মসীলিপ্তি মাঝে
লুপ্তরেখা সংসারের ছবি,-ধানকাটা কাজে
সারাবেলা চাষীর ব্যস্ততা;
গলা-ধরাধরি কথা
মেয়েদের; ছুটি-পাওয়া
ছেলেদের ধেয়ে-যাওয়া
হৈ হৈ রবে; হাটবারে ভােরবেলা
বস্তা-বহা গােরুটাকে তাড়া দিয়ে ঠেলা,-
আঁকড়িয়া মহিষের গলা
ওপারে মাঠের পানে রাখাল ছেলের ভেসেচলা।
নিত্যজানা সংসারের প্রাণলীলা না উঠিতে ফুটে
যাত্রী লয়ে অন্ধকারে গাড়ি যায় ছুটে।

88