পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভয় করেনা। এই ভয়ঙ্কর ধ্বংসকারী পশুশক্তির সম্মুখে হাজং চাষী অস্ত্র হাতে লইয়া রুখিয়া দাঁড়াইল, তাহাদের পুরোভাগে দাঁড়াইলেন হাজং মাতা রাসমণি। রাসমণি চারিদিক ঘুরিয়া ঘুরিয়া হাজং চাষীদের স্বতঃস্ফূর্ত ও খণ্ড খণ্ড প্রতিরোধ সংগ্রামকে ঐক্যবদ্ধ রূপ দিতে লাগিলেন।”

 এমনকি জঙ্গলে সামরিক শিক্ষাশিবির বানিয়ে কৃষকদের গেরিলাযুদ্ধের কৌশল শিখিয়ে, গ্রামের পর গ্রাম প্রচার ও দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে শত্রুসেনাকে বিভ্রান্ত করে তোলেন তিনি। ৩১শে জানুয়ারী বহেরাতলী গ্রাম আক্রমণ করে ২৫ জন রাইফেলধারী সৈন্য। পঁয়ত্রিশ জন কৃষকবীর সঙ্গে নিয়ে সোমেশ্বরী নদীতীরে তাদের সাথে প্রবল যুদ্ধে অবতীর্ণ হন রাসমণি। আধুনিক অস্ত্রধারী সুশিক্ষিত সেনার সাথে তাঁর ও সুরেন্দ্র হাজং-এর নেতৃত্বে কৃষকবাহিনীর সেই যুদ্ধ ভারতের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অধ্যায়। দশটি বুলেটে ছিন্নভিন্ন রাসমণি ঘটনাস্থলেই প্রাণ বিসর্জন দেন। হাজং রক্তে লাল হয় সোমেশ্বরীর বালুচর। আরো অনেকসংখ্যক গ্রামবাসীর প্রতিরোধে সেনাবাহিনী পিছু হঠে যায়।

 কোনো একজনের মৃত্যুতে সংগ্রাম হয়তো সাময়িক ধাক্কা খায় কিন্তু থামে না। রাসমণির মৃত্যুতেও হাজং জনতা ব্যর্থমনোরথ হয়নি। তাঁরই দেখানো পথে বিদ্রোহীরা আন্দোলনকে আরো বড় আকারে ছড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে রেবতী, শঙ্খমণি সহ বহু নারী যোদ্ধার সাথে সর্বমোট ১৫০ জন শহীদ হন। শেষাবধি অবসান হয় টঙ্ক প্রথার

অনুরাধার কথা:

মাত্র ৫৪ বছর বয়সে মারা গেলেন যে অনুরাধা গান্ধী তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু ১৯৭১ সালে। ওই বছরই ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষের মধ্যে ত্রাণকার্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুম্বাই-এর এলফিনস্টোন কলেজের মেধাবী ছাত্রী অনুরাধা। তথাকথিত উজ্জ্বল কেরিয়ারের হাতছানির পরোয়া না করে যুক্ত হন প্রগতিশীল যুব আন্দোলন নামে নকশালপন্থী সংগঠনের সাথে। ৭০ দশক

৩৫