পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জুড়ে পশ্চিমভারতের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিপ্লবী আন্দোলন গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করেন অনুরাধা। ৭৪ সালে শিবসেনার মদতে ঘটা ‘ওয়রলি' দাঙ্গা প্রতিরোধে এবং অ্যাফ্রো-আমেরিকান বিপ্লবী সংগঠনের আদলে গড়ে ওঠা ‘দলিত ব্যবস্থার' মুভমেণ্টে নিজেকে নিযুক্ত করেন। জরুরী অবস্থা পরবর্তী সময়ে সিভিল লিবার্টি আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে CPDR-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তিনি। ১৯৭৭ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সিভিল লিবার্টি কনফারেন্সে জোরালোভাবে রাজনৈতিক বন্দীমুক্তির দাবিতে সওয়াল করেন। উপস্থিত ছিলেন ভি.এম. তারাকুণ্ডে, গোবিন্দ মুখোটি, ভারাভারা রাও এমনকি জর্জ ফার্নাণ্ডেজ, অরুণ শৌরীর মতো ব্যক্তিত্ব। CPI(ML)(PW)কে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় করবার জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচার জরুরী হয়ে পড়ে। এই গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়ে অনুরাধা মুম্বাই শহরের শান্ত জীবনযাত্রা ছেড়ে রওনা দেন নাগপুর। নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতত্ত্ব পড়ানোর কাজ করতে করতে সংগঠনের বিস্তার ঘটান সাফল্যের সঙ্গে। তাঁর আন্তরিকতা তাঁকে শিক্ষক হিসাবেও জনপ্রিয় করে তোলে। বিপ্লবী রাজনীতিতে আকৃষ্ট হন বহু ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। বিচ্ছিন্ন জঙ্গী শ্রমিক আন্দোলনকে এক ছাতার তলায় আনতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন সে সময়। নাগপুর শুধু নয়, সংলগ্ন এলাকায় কাম্পতি, খাপারখোলা, জবলপুর, অমরাবতীতেও ঠিকা শ্রমিক, বিড়িশ্রমিক, রেল শ্রমিক এবং চন্দ্রপুরে কয়লাখনি শ্রমিকদের সংগঠিত করেছেন তিনি। কয়েকবার কারাবরণ করতে হয়েছে তাঁকে, ফলে বিপ্লবী আন্দোলনের প্রতি ভালোবাসা আরো দৃঢ় হয়েছে। পুলিশি হানাদারীর ফলে যখন প্রকাশ্য কাজকর্ম অসম্ভব হয়ে পড়ে, অনুরাধা চলে যান বস্তারে গোন্দ আদিবাসীদের মধ্যে, তিনবছর সেখানে অতিবাহিত করে তাদের সমস্যা, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রাকে গভীরভাবে অধ্যায়ন করলেন। কী করে তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যেতে হয় তা হাতে কলমে দেখালেন এই বিপ্লবী নারী। মহিলাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা, রাজনৈতিক শিক্ষাশিবির গড়ে সচেতন করতে থাকেন আদিবাসীদের। শুধুমাত্র তাত্ত্বিক নেতামাত্র না হয়ে থেকে

৩৬