পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সকলের সাথে মিশে যাওয়ার দুর্লভ গুণ যেকোনো কমিউনিস্ট বিপ্লবীর সম্পদ।

 একথা সত্য যে তাঁর মৃত্যু ঘটেছে খুবই মর্মান্তিকভাবে, গোপন জীবনযাত্রার জন্যে উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ, বা সময় কোনোটাই পাওয়া যায়নি। দুরারোগ্য ব্যাধিকে শেষ পর্যন্ত জয় করতে পারেননি শ্রীমতি অনুরাধা গান্ধী। কিন্তু মৃত্যুতেই তো সবকিছু শেষ হয়ে যায় না। কোনো মৃত্যুতে মানুষ বিস্মৃত হয় আবার কোনো মৃত্যু তাকে অমর করে। সব হারা জনতার তরে যদি মরণ হয় তাহলে অমন হিমালয় পর্বতও তার ওজনের কাছে তুচ্ছ। চলমান বিপ্লবী ও নারী আন্দোলনের মূর্ত প্রতীক অনুরাধা চিরকাল বেঁচে থাকবেন শ্রমজীবী জনতার হৃদয়ে। কারণ তিনি ছিলেন মৃত্যুর চেয়েও বড়ো।

সংগ্রাম প্রবহমান:

ফরাসী বিপ্লবকে নিয়ে ইউজিন দেলাক্রোয়ার আঁকা সেই অসামান্য ছবি Liberty Leading the people। ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত বিপ্লবী নারী ছুটছেন। তাঁর এক হাতে পতাকা, ওপর হাতে রাইফেল। ১৭৮৯-এর ১৪ই জুলাই, চুরমার হয়ে গেল অত্যাচারের প্রধান কেন্দ্র বাস্তিল। শুধু ফ্রান্স নয়, গোটা ইউরোপের রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছিল ফরাসী বিপ্লব। সেদিন গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছিলেন নারীরা। আবার ১৮৭১-এর মার্চ মাস। ভোরবেলায় প্যারিসের অনভিজাত নারীরা পুরুষদের জাগিয়ে তুলে ভার্সাই সরকারের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সমাবেশিত করেছিলেন। সূচনা হয় প্যারি কমিউন। কমিউনের অন্যতম নেত্রী লুইসি মিশেল নিশ্চিন্ত মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে, নিজের আদর্শে অটল থেকে বলেছিলেন, “মেয়েদের মুক্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য আসতে পারে একমাত্র বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে সনাতন ধারনা ও মূল্যবোধকে দু-পায়ে মাড়িয়ে”। ১৯১৭-র ৮ই মার্চ। মহান ফেব্রুয়ারী বিপ্লবের সূচনাই হলো শ্রমজীবী নারীদের হাত ধরে। হাজার হাজার রুশ মহিলা রুটি, জমি ও শান্তির দাবি নিয়ে নেমে এলেন পেট্রোগ্রাদের রাস্তায়। ৮ই মার্চ একটি মাইলস্টোন মাত্র। নকশালবাড়ির কৃষক রমণীরা যেদিন বুক পেতে দেন

৩৮