পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রায়ের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার গুরুত্ব প্রথম অনুধাবন করেন তিনি, কারণ অত্যাচারী শাসক কেবল বোঝে বন্দুকের ভাষা, পাশাপাশি তিনি এও লিখেছেন, “মানুষের জীবন আমরা পবিত্র বলে মনে করি। মানুষের রক্ত ঝরাতে বাধ্য হয় বলে আমরা দুঃখিত। তবে বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে সকলকে সমান স্বাধীনতা দিতে, মানুষের দ্বারা মানুষের শোষণকে শেষ করতে বিপ্লবে কিছু না কিছু রক্তপাত অনিবার্য।” অর্থাৎ বিপ্লবীরা যে খুনি বা রক্তপিপাসু নয় তা লেখার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। লালাজীর মৃত্যুর পর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের সহধর্মিণী বাসন্তীদেবী একটি শোকসভায় বলেছিলেন, “আমি একজন বিভারতীয় নারী হিসাবে দেশের যুবশক্তির প্রতিক্রিয়া জানতে চাই যে, লালাজীর মতো দেশবরেণ্য নেতা যদি পুলিশের লাঠির ঘায়ে মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে সেই জাতির অপমান অবহেলার বিরুদ্ধে লালাজীর চিতা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার আগেই তারা কি ব্যবস্থা নিতে চায়?”

 HSRA-এর সৈনিকেরা তুরন্ত জবাব দিয়েছিলেন, দেখিয়েছিলেন সব ভারতবাসীর রক্ত শীতল হয়ে যায়নি। মার খেয়ে পাল্টা মার দিতে জানে। এখন এটাকে যদি কেউ শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদী (বড়ো হরফ আমার) কার্য বলে অভিহিত করেন, তাহলে তার পেছনে আলাদা কারণ আছে। L. J. Carr প্রমুখ বুর্জোয়া তাত্ত্বিকেরা এভাবেই বিপ্লব ও হিংসাকে সমার্থক দেখিয়ে মার্কসবাদের বিরোধীতা করে থাকেন। দুঃখের বিষয় আমাদের দেশের ঐতিহাসিকেরা সচেতন ও অচেতনভাবে একই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। ভগৎ সিংয়ের ভুল মূল্যায়ণ তার অন্যতম প্রমাণ।

 বি. টি. রণদিভে বলেছেন “সর্বহারা শ্রেণীর স্বপ্নকে ও সমাজতন্ত্রের সমর্থনে তাদের দেওয়া শ্লোগান থেকেই সমাজতন্ত্রের প্রতি সাধারণভাবে তাদের সমর্থনের কথা জানা যায়, যদিও তাকে ঠিক মার্ক্সবাদে বরণ করে নেওয়া চলে না।”১০[ভগৎ সিং-এর চিন্তাভাবনা-বিটি রণদিভে]

 অথচ ওই একই প্রবন্ধে লেখক কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের প্রতি ভগৎ সিং-এর বার্তার কথা উল্লেখ করেছেন যেখানে সর্বহারা শ্রেণীর চূড়ান্ত বিজয়

৪৬