পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মানুষের ভিতরে প্রতিরোধের আকাঙ্খা জায়গায়, তাঁকে শক্তি দেয়, দোদুল্যমান চিত্র ব্যক্তিরা এরই ভিত্তিতে সাহসে বুক বাঁধে, তার মধ্যে সৃষ্টি হয় আত্মবিশ্বাসের।”১৪

 এখান থেকে আপাত প্রতীয়মান যে, লেখক সন্ত্রাসবাদকে গৌরবান্বিত করেছেন, তার পক্ষে ওকালতি করেছেন কিন্তু নিছক খুন-জখম, দু-চারটে ইংরেজ মেরে আসল উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে না তাও পরবর্তী একটি লেখায় প্রকাশ করে দিয়েছেন তিনি। সে প্রসঙ্গে পরে আসবো তার আগে মুজফফর আহমেদ মীরাট ষড়যন্ত্র মামলায় ১৬-০৩-১৯৬১ তারিখে দেওয়া বয়ানে বলেছিলেন একটু দেখা যাক।

 “প্রত্যেক বিপ্লবী সন্ত্রসবাদীদের ত্যাগ স্বীকারকে নিশ্চয় সাধুবাদ জানাবেন কিন্তু সন্ত্রাসবাদীরা কি বিপ্লবী? আমি নিশ্চয়ই বলব, না। তারা বিপ্লবী জন। তারা বিপ্লবের যা প্রকৃত সামাজিক উপাদান সেই মজুর শ্রেণীর ও কৃষকসমাজের ওপর কখনোই আস্থা পোষণ করেননি।”১৫

 এই অভিযোগ ভগৎ সিং-এর ক্ষেত্রে খাটে না যিনি দ্বিধাহীন ভাবে বলেছেন যে, প্রকৃত বিপ্লবী সেনাবাহিনী অবস্থান করছে গ্রামে এবং কলকারখানায় কৃষক ও শ্রমিকদের মধ্যে কিন্তু আমাদের বুর্জোয়া নেতারা তাদের মোকাবিলা করার সাহস নেই। ঘুমন্ত সিংহের একবার তন্দ্রা টুটলে সে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে।১৬ [তরুণ রাজনৈতিক কর্মীর প্রতি-২ রা ফেব্রুয়ারী, ১৯৩১]

 তর্কের অবকাশ আছে যে শ্রমিক-কৃষকদের তুলনায় তিনি সেই সময়ে দাঁড়িয়ে প্রফেশন্যাল রেভুল্যুশনারী বা শিক্ষিত সাহসী যুবক সম্প্রদায়ের উপর বেশি গুরুত্ব আরোপ করছিলেন কিনা। কিন্তু যে ব্যক্তি ‘মানুষের প্রতি আমরা ভালবাসা কারো থেকে কম নয়’ এই রচনায় শ্রমিকশ্রেণীকে সমাজের সত্যিকারের স্রষ্টা বলে চিহ্নিত করেছেন অথচ তাদেরই প্রধান বৈপ্লবিক শক্তি বলে মনে করতেন না এই অভিযোগ ধোপে টেঁকে না। আরো একবার বলা ভালো মাত্র সাড়ে তেইশ বছরের জীবনে মার্ক্সবাদ চর্চার যথেষ্ট সময় তিনি

৪৯