পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সামন্তমশাই এ কথা বলতেই পারেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ সত্য কি? নিম্ন আদালতে ভগৎ সিংকে প্রশ্ন করা হয় তিনি ‘বিপ্লব' বলতে কি বোঝেন? উত্তরে তিনি যা বলেন তা এই রূপ-

 “বিপ্লব মানে রক্তক্ষয়ী হানাহানি নয়, বিপ্লবের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কোনো প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধ মেটানোরও সম্পর্ক নেই। বিপ্লবের অর্থে বোমা বা পিস্তলের চর্চাও বোঝায় না। বিপ্লব, বর্তমান সমাজব্যবস্থা যা কিনা জ্বলন্তরূপে অন্যায়ের কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে আছে, সেই ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন।“ এর চাইতে সহজ সরল সংজ্ঞা বোধহয় আর দেওয়া সম্ভব নয়।লোভ সামলানো যাচ্ছে না আরেকটি জায়গা থেকে উদ্ধৃতি টানবার-

 “তোমাকে তো বলেছি ভারতী, বিপ্লব মানেই শুধু রক্তক্ষয়ী কাণ্ড নয়, বিপ্লব মানে অত্যন্ত দ্রুত আমূল পরিবর্তন।” [পথের দাবী, সপ্তবিংশ পরিচ্ছদ]

 ইতিহাসের স্বাভাবিক নিয়মে বিপ্লবের আবির্ভাব ঘটে, মার্কস যাকে বলেছেন ‘Locomotives of history' |২৪ গবেষকরা যেরকম হাতে গরম সংজ্ঞা চান সেটা তো থিওরিটিক্যালি দেওয়া সম্ভব নয় তবে ইহুদি কবি জোসেফ বলশোভার তাঁর বিপ্লব নামক কবিতায় একটি সুন্দর চিত্র এঁকেছেন-

আমি আসি। কারণ দেশের জনগণের বদলে
স্বৈরাচারীরাই সিংহাসন দখল করেছে
আমি আসি। কারণ শাসকেরা তাদের যুদ্ধের
প্রস্তুতির পাশাপাশি শান্তির রোমন্থন করে
আমি আসি। কারণ যে বন্ধন মানুষকে একত্রে
গ্রাথিত করে তা এখন শিথিল
আমি আসি। কারণ মূর্খেরা মনে করে যে
তাদের তৈরী বেড়ার মধ্যেই প্রগতি আবদ্ধ থাকবে।২৫

 আর বিপ্লবের তাত্ত্বিক বা সাংগঠনিক দিককে ফুটিয়ে তুলতে গেলে শুধু রচনার দিকে তাকালে হবে না, লক্ষ্য করতে হবে সিং ও তাঁর সাথীদের

৫২