কার্যকলাপের উপর। এই জাত-বিপ্লবীদের স্বল্প অথচ কর্মময় জীবন তাত্ত্বিক বিচার কতটা গুরুত্ব পাবে তা বলার কাজ ঐতিহাসিক কিম্বা গবেষকদের। কিন্তু বাস্তবে তা যে পরবর্তী সমস্ত গণ আন্দোলনকে প্রভাবিত করেছিল তা অনস্বীকার্য। তেভাগা, তেলেঙ্গানা, নকশালবাড়ি তো এই ঐতিহ্যকেই বয়ে এনেছিল। জনসমর্থনের অভাব, সন্ত্রাসবাদী ঝোঁক ইত্যাদি কারনে বিপ্লববাদী কার্যকলাপ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছিল, ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল বলে যারা মনে করেন তারা ব্যর্থতার নিরিখে, সফলতার মাপকাঠিতে ব্যক্তির আত্মবলিদান, কর্তব্যনিষ্ঠাকে বিচার করার ভুল করেন। যা ইতিহাসের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতারই নামান্তর।
বিপ্লব যেমন কোনো রক্তক্ষয়ী, মানবতা বিরোধী ব্যাপার নয়, তেমনি ভোজসভা বা সূক্ষ্ম সুললিত সুচীকর্মও নয়, কখন কোন পথ ধরে আসবেতা বই পড়ে ঠিক করা যায় না। সাফল্য-ব্যর্থতা অনেক সময়ই নির্ভর করে পরিস্থিতির ওপর। সেদিক থেকে কমরেড সিংয়ের ধারণা কি উচ্চস্তরের ছিল তা তাঁরই সহকর্মী বিপ্লবী শিববর্মা স্মৃতিচারণ থেকে অনুমান করা যাবে-
“খানিক্ষণ চুপ করে থেকে ভগৎ সিং আবার বলল আমরা সবাই সৈনিক। সৈনিকের সবচেয়ে বড়ো আকর্ষণ রণক্ষেত্রের প্রতি। তাই অ্যাকশনে যাবার কথা উঠতেই সবাই উন্মত্ত হয়ে ওঠে। তবু আন্দোলনের কথা মনে রেখে কাউকে না কাউকে তো অ্যাকশনের মোহ ছাড়তে হবে। সাধারণত অ্যাকশনে যারা লড়ে বা ফাঁসিতে ঝোলে শহীদত্ত্বের বরন মালা তাদেরই গলায় পড়ে একথা ঠিক, ইমারতের সিংহদরজায় হীরার যে অলঙ্করণ এঁদের মূল্যও তাই অথচ ইমারতের দিক থেকে দেখতে গেলে ভিতের নিচে চাপা পড়া একটা পাথরের তুলনায় এদের মূল্য কিছুই নয়......
তাছাড়া ত্যাগ আর আত্মবলিদানেরও দুটো রূপ। এক হলো গুলি খেয়ে বা ফাঁসিতে লটকে মরা- এর চমকটাই বেশি, কষ্টটা কম। দ্বিতীয়টা হল পিছন থেকে সারাজীবন ইমারতের বোঝা বয়ে বেড়ানো। আন্দোলনের চড়াই
উৎরাইয়ের মধ্যে প্রতিকূল অবস্থায় কখনও কখনও এমন সময় আসে যখন