পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মীনা ও তাঁর সহযোগীরা। পরবর্তীতে তিনি বিবাহ করেছেন আফগানিস্তান লিবারেশন অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রখ্যাত মার্কসিস্ট-লেনিনিস্ট কর্মী ফয়েজ আহমেদকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ডঃ ফয়েজ আহমেদকেও ১৯৮৬ সালে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি নৃশংসভাবে খুন করে। শুধুমাত্র রাজনীতিতেই মীনার কর্মকাণ্ড থেমে থাকেনি, উদবাস্তু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, হসপিটাল, মহিলাদের জন্য কুটির শিল্পকেন্দ্র স্থাপনা ইত্যাকার সামাজিক কাজ তাঁকে দিল অভাবনীয় জনসমর্থন যা শঙ্কিত করে তুলল তালিবানী গোষ্ঠীগুলিকে।

 আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বদেশের নারীদের কথা তুলে ধরে তিনি তৎকালীন পুতুল সরকার তথা সামাজিক সাম্রাজ্যবাদীদেরও মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠলেন যার জন্য তাঁকে CIA এর দালাল, অতিবাম-নৈরাজ্যবাদী প্রভৃতি নানাবিধ হাস্যকর কুৎসারও সম্মুখীন হতে হয়েছে।

 অবশেষে, ১৯৭৮-এর ৪ঠা ফেব্রুয়ারী KGB মদতপুষ্ট সিক্রেট পুলিশ KHAD-এর গুন্ডাবাহিনী ও ভাড়াটে মৌলবাদী জঙ্গীরা মীনাকে হত্যা করল নিজ বাসভবনে, পাকিস্তানের কোয়েত্তা-তে। গনতন্ত্র, নারীমুক্তি ও স্বাধীনতার দাবিতে এক যুগ ধরে বিরামহীনভাবে কাজ করে চলা মীনা কেশওয়ার কামাল এভাবেই প্রাণ দিলেন মানবতার শত্রুদের হাতে। মাত্র ত্ৰিশ বছর বয়সে! আফগান মহিলাদের ঘুমন্ত সিংহর সাথে তুলনা করেছিলেন এই বিপ্লবী রমণী, যাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া দেশে প্রকৃত বিপ্লব সম্ভব নয় একথা সঠিকভাবেই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন তিনি।

 ঔপনিবেশিক শক্তি দেশীয় মৌলবাদী বর্বরদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁকে হত্যা করেছে। হত্যা করেছে এবং করছে আরো অগণিত বিপ্লবীকে। কমিউনিজমের আড়ালে পররাজ্যলোভী সামাজিক সাম্রাজ্যবাদকে হটিয়ে এখন সেখানে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ স্ব-মহিমায় অধিষ্ঠিত। ঘটে চলেছে একের পর এক যুদ্ধাপরাধ, ভুলুণ্ঠিত হচ্ছে মানবাধিকার। কিন্তু স্বপ্ন মরে না, মীনার সাথীরা ও অসংখ্য বিপ্লবী যোদ্ধা দেশের শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মরণপণ

৭১