পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রমুখ। এর প্রায় দু'মাস বাদে পাহাড় জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ২৯০ মাইল পদব্ৰজে এসে ইম্ফল-কোহিমা-ঢাকা হয়ে তাঁরা প্রবেশ করবেন কলকাতায়।

 ১৯১৭ সালের অক্টোবর বর্মা মুলুকে জন্মগ্রহণ করেন অমর নাগ। পিতা ছিলেন সে দেশের উচ্চপদস্থ রাজ কর্মচারী। ১৯৩৫ সালে রেঙ্গুনের বিখ্যাত বেঙ্গল অ্যাকাডেমী থেকে ম্যাট্রিক ও ১৯৪১-এ ডাক্তারি পাশ করেন কৃতিত্ত্বের সাথে। অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দুই গোষ্ঠীর বিপ্লবীদের সঙ্গেই তাঁর ছাত্রাবস্থায় যোগাযোগ ঘটে, তাঁদের প্রভাবে সশস্ত্র বিপ্লববাদে হাতেখড়ি হয় অমর নাগের। কমিউনিজমে আকৃষ্ট হন বর্মা কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব হরিনারায়ণ ঘোষালের সংস্পর্শে। ১৯৩৭ সালে ব্রহ্মদেশের অবিসংবাদিত নেতা আউং সানের (বর্তমান জননেত্রী ও নোবেল জয়ী সু-চি'র পিতা) ডাকে ডাঃ নাগ ও তাঁর সহকর্মীরা ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। খনিজ তেল শ্রমিক মহলে তাঁর জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে গিয়েছিল খুব সহজেই। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে আউং সান-কে সম্পাদক নির্বাচিত করে প্রতিষ্ঠা হল কমিউনিস্ট পার্টি যা অচিরেই নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। ধরপাকড় ও নানারকম দমন পীড়নের মধ্যেই শ্রী নাগ সে দেশের বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নগুলিকে সংগঠিত করার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। সে সময় বর্মায় ভারতীয় শ্রমিকের সংখ্যা বেশি ছিল, বাংলা উড়িষ্যা অন্ধ্রপ্রদেশের গরীব জেলাগুলি থেকে হাজার হাজার মানুষ মজুরের কাজ নিয়ে আসতেন, তাঁদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই প্রভাব বিস্তার করে ফেললেন এই বাঙালী বিপ্লবী এবং প্রথম গ্রেপ্তার বরণ করলেন ১৯৪১-এর ফেব্রুয়ারী মাসে।

 ইতিমধ্যে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে দেশজোড়া বিক্ষোভের মাঝে আউং সান চেষ্টা চালাচ্ছিলেন জাপানি সরকারের সাথে যোগাযোগ করার। জাপানিরা বর্মার নেতাদের সাহায্যের আশ্বাসবাণী শোনায়। অমর নাগ তখন ইনসিন জেলে বন্দী। প্রথমে সকলকেই সেখানে বন্দী করে রাখা হয়েছিল কিন্তু বন্দী কমিউনিস্ট নেতৃবর্গ ও সদস্যেরা যখন জেলকমিটি গড়ে তোলেন ও জেলের ভেতর থেকেই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর হন

৭৪