পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করেছেন।

 ওদিকে বার্মার রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত গতিপথ বদলায়। বাঙালী বিপ্লবীদের আশঙ্কা সত্যি হল। আউং সানের কাছে দেরীতে হলেও জাপানিদের সাম্রাজ্যবাদী চেহারা প্রকট হয়ে পড়ে এবং গোটা দেশজুড়ে নয়া বিদেশী হানাদারদের বিরুদ্ধে মাথাচাড়া দেয় মুক্তি আন্দোলন, ইতস্তত গেরিলা সংগ্রাম। ইংরেজ শৃঙ্খল থেকে রেহাই পেয়ে জাপানিদের ফ্যাসিস্ট শাসন কখনোই কাম্য ছিল না বর্মিজ জনগণের, তাঁরা কমিউনিস্ট পার্টির দেশজোড়া গণ অভ্যুত্থানের ডাকে সাড়া দিল। রেঙ্গুনের বুকে প্রকাশ্যে জাপানিদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করলেন প্রধান জাতীয়তাবাদী নেতা আউং সান। ফলত সাম্রাজ্যবাদীদের ভাড়াটে ঘাতকবাহিনীর হাতে নিহত হতে হল তাঁকে কিছুকাল পরেই। ততদিনে অবশ্য যুদ্ধে জাপানের পরাজয় ঘটেছে।

 ১৯৪৬-৪৭ সালে ভারতবর্ষের নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে যুদ্ধপীড়িত বিপদসংকুল বার্মায় একে একে প্রবেশ করেছেন ডাঃ নাগ ও তাঁর সাথীরা, যে বর্মা হবে তাঁদের শেষ রণক্ষেত্র। যোগ দিয়েছেন Anti Fascist Liberation Front এ। আউং সানের মৃত্যুর পর কমিউনিস্ট পার্টির সংকটের দিনে তাঁদের এই প্রত্যাবর্তন নতুন করে আশা জাগালো সেদেশের হাজারো মুক্তিকামী মানুষের হৃদয়ে। ৪৮ সাল থেকে শুরু হল গোটা দেশজুড়ে গণ আন্দোলন। শাসকের দমনপীড়ন, জেল, গুপ্তহত্যা, বিচারের প্রহসনাতে খুন, কিছুই আটকাতে পারেনি সেদিনের অকুতোভয় ফ্যাসিবিরোধী সৈনিকদের। মুক্তিফৌজের দখলে এল দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। রেঙ্গুন জেনারেল হাসপাতালের সুখের চাকরি ছেড়ে এক শহর থেকে অন্য শহর, গ্রাম-নগর, পাহাড় জঙ্গল বন্দর তোলপাড় করে বেড়াচ্ছেন পার্টির মেডিক্যাল বাহিনীর প্রধান তথা পলিটব্যুরো মেম্বার দুর্ধর্ষ বিপ্লবী অমর নাগ। জীবিত বা মৃত যার মাথার দাম শাসকের কাছে তখন অনেক। ইতিমধ্যেই বিপ্লবী সরকারের প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ১৯৪৮-এর ৪ঠা এপ্রিল প্রোম শহর দখল করে

৭৬