মুখবন্ধ...
শহীদের কথা
ইতিহাস এক নিষ্ঠুর নির্বাচক; অসংখ্য ছড়ানো উপাদান থেকে সে শুধু বেছে নেয় পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত মুখগুলিই, বাইরে পড়ে থাকে নাম-না-জানা কত না চরিত্র, ব্যক্তির স্মৃতিতে কিছুদিনের জন্য তাদের উজ্জ্বল উপস্থিতি। তারপর স্মৃতি ধূসর থেকে ধূসরতর হতে থাকে, মলিন থেকে মলিনতর হতে থাকে তাদের ঔজ্জ্বল্য, তবু ইতিহাসের এই বর্জনকে এড়ানো যায় না। ঔপনিবেশিক ও জাতীয়তাবাদী ইতিহাস-চর্চায় জনগণ একেবারেই গৌণ, মার্ক্সবাদী ও সাব-অল্টার্ণ ইতিহাসবিদ্রাই মনে করিয়ে দিয়েছেন তাদের ভূমিকা। কিন্তু ইতিহাস যত বড়ো ক্যানভাসই ব্যবহার করুক না কেন, প্যানারোমার বিস্তৃতিতে সমষ্টির চেহারা ধরা যেতে পারে, ব্যক্তির অবদানকে আলাদা করে চিহ্নিত করা কিছুতেই সম্ভব হয় না। প্রশ্ন উঠতে পারে ব্যক্তিকে স্বতন্ত্রভাবে নির্দিষ্ট করার প্রয়োজন আছে কী আদৌ!
সে এক কূটতর্ক। কিন্তু এও তো মানতে হয় যে ইতিহাস যাঁকে স্মরণীয় করে তোলে সেই মুহূর্ত থেকে তিনি পরিণত হন এক আইডলে, এবং আইডল মাত্রেই শ্রদ্ধাভাজন ও অভিনন্দনীয়, কিন্তু কিছুটা মাপে বড়ো, ইংরেজিতে যাকে বলা যায় ‘লার্জার দ্যান লাইফ'। এই মাপ আদর্শবাদের প্রতিমূর্তি হতে পারেন, কিন্তু কিছুটা দূরবর্তীও তো। লেনিন বা মাও-সে-তুং বরণীয়, কিন্তু তাদের সঙ্গে চেনাজানা তাদের কর্মে, তাদের লেখায়। তাদের আদর্শ অনুসারে জীবনকে গড়ে নেওয়া যায়, কিন্তু কী করে সেই আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে তা বুঝতে গেলে দরকার হয় এমন মানুষদের জানা যারা অনেকটা কাছাকাছি, যাদের জীবন থেকে বুঝে নেওয়া যায় কীভাবে বরণীয়দের পথে চলতে হয়। এ ধরনের মানুষ অজস্র, নিজেদের জীবনে
৯