পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চালায় তাঁরা খুব স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে পারেনি ডাঃ দাভলকরকে। তাই তাঁকে প্রাণ দিতে হল।

 হত্যার দিন প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন দাভলকর। সকাল ৭:২০ নাগাদ দুই বন্দুকধারী খুব কাছ থেকে পরপর চার রাউন্ড গুলি চালিয়ে খুন করে তাঁকে। পুনে ওঙ্কারেশ্বর মন্দিরের সামনে পড়ে থাকে মহান বিজ্ঞানকর্মীর লাশ! এরপর গোটা রাজ্যজুড়ে বিজ্ঞানকর্মীরা, অসংখ্য সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামেন, স্বতঃস্ফূর্ত বনধ পালিত হয়। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রগতিশীল ও বিজ্ঞান সংগঠনগুলি তীব্র ধিক্কার জানায়। মৃত্যুর পরেই তড়িঘড়ি করে সব রাজনৈতিক দলগুলি শোকবার্তা পাঠিয়ে দেয়। মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চৌহান ১০ লক্ষ টাকা পুরষ্কারই ঘোষণা করে ফেলেন খুনির সন্ধানে! যদিও সনাতন সংস্থা নামে একটি হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনের সদস্যকে পুলিশ সন্দেহবশতঃ গ্রেপ্তার করলে শিবসেনাপ্রধান উদ্ধব ঠাকরে নির্লজ্জভাবে ধমকি দিতেও থামেনি! দাভলকর স্মরণে পুনে ফিল্ম ইন্সটিটিউট পরিচালিত অনুষ্ঠান বানচাল করে দেয় A.B.V.P-এর গুন্ডাবাহিনী। আরো মজার ব্যাপার যে বিলটি দাভলকর নিজের জীবদ্দশায় অক্লান্ত প্রচেষ্টাতেও পাশ করাতে পারেনি সেটিও অর্ডিন্যান্স আকারে পাশ করানো হল পরের দিন! এ সবই ছিল ড্যামেজ কন্ট্রোলের চিরাচরিত ব্যাবস্থা।

 দাভলকরের মতো ধর্মদ্রোহী মানুষের শেষজীবন অনেকক্ষেত্রেই খুব মর্মান্তিক, বেদনাদায়ক। ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে তাঁর ভুরি ভুরি উদাহরন মিলবে।

 অ্যানাক্সাগোরাস (খ্রিস্টপূর্বাব্দ ৫০০-৪২৮)-কে কুসংস্কারাচ্ছন্ন এথেন্সবাসীরা ধর্মদ্রোহী বলে চিহ্নিত করে, তাঁকে নির্বাসিত করা হয়। যতদূর জানা গেছে ধর্মবিরুদ্ধ বৈজ্ঞানিক মতবাদ প্রচারের জন্য এটিই প্রথম লিপিবদ্ধ নির্যাতন।

 কোপার্নিকাসের De Revolutionibus নিষিদ্ধ হলো।

৮৩