মাতুলালয়ে, ডুমুরিয়া থানার সাহস গ্রামে। ছোটবেলা থেকেই বোহেমিয়ান বিষ্ণু নৈহাটি (পূর্ব বাংলার) স্কুলে পড়ার সময় সাধুসংগের ঝোঁকে বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান! বেশ কিছুকাল সন্ন্যাস জীবন যাপন করবার পর সে পথে আগ্রহ হারিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। উচ্চ সামন্ত বংশের ছেলে হলেও ভাইবোনেদের অনেকেই গোপনে ব্রিটিশবিরোধী সংগঠনের সাথে অল্পবিস্তর যুক্ত ছিলেন। তাঁর এক ভাই নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও বোন ভানুদেবী ইংরেজ বিরোধীতার জন্য কারারুদ্ধ হয়েছেন, নির্যাতিত হতে হয়েছে তাঁদের। এর প্রভাব পড়েছিল বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায়ের ওপর। যশোর-খুলনা এলাকায় জাতীয় বিপ্লববাদী কার্যকলাপ বিশের দশকের প্রথম ভাগেই মাথাচাড়া দিয়েছিল। যুগান্তর ও অনুশীলন সমিতি উভয় দলের প্রভাবে সেখানকার তরুন বিপ্লবীরা ‘যশোর-খুলনা যুবসংঘ' (Jes- sore-Khulna Youngman's Association) নামে একটি স্বতন্ত্র বিপ্লবী গোষ্ঠী গড়ে তোলেন ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে। এর সাথে জরিত হয় পড়েন বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ একে কমিউনিস্ট-টেররিস্ট গ্রুপ বলে অভিহিত করে। এই সংগঠন জনকল্যাণমুলক কাজকর্মের আড়ালে অস্ত্র এবং অর্থসংগ্রহ করতো কারণ রাজনৈতিক ডাকাতি ও সশস্ত্র বিপ্লববাদী কাজের মাধ্যমে ইংরেজ বিতাড়ন ছিল তাঁদের মূল লক্ষ্য। কমিউনিস্ট পারটিতে যোগদান করবার আগে পর্যন্ত বিষ্ণু ছিলেন এই গুপ্তসমিতির সর্বক্ষণের কর্মী, থাকতেন খালিশপুরে স্বরাজ আশ্রমে যেখানে কৃষিকাজ, শরীরচর্চা, পঠন পাঠন ইত্যাদি সামাজিক কাজের অছিলায় সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সশস্ত্র অভুত্থ্যানের প্রস্তুতি চলত! যদিও পরবর্তীতে ভবানী সেন, শচীন মিত্র প্রমুখ কমিউনিস্ট নেতৃবর্গের প্রভাবে ‘রাজনৈতিক ডাকাতি'র পথ পরিত্যাগ করে সসস্যর সমাজতান্ত্রিক চিন্তার আলোকে মার্কসবাদী চক্র গড়ে তোলার দিকে এগিয়ে যান। স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে গণসংযোগ গড়ে তোলার মূল স্থপিত ছিলেন তরুন বিষ্ণু। তিনি ও তাঁর সাথীরা নিজেরাই কৃষিকাজে হাত লাগান, উদ্বৃত্ত ফসলের অংশ হাটে বিক্রি করার পাশাপাশি স্থানীয় শ্রমজীবী মানুষকে রাজনীতি সচেতন করতে থাকেন। তাঁর নেতৃত্বে সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী পাইকগাছা অঞ্চলে
পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৮৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬