ভারতবর্ষের কৃষক জনসাধারণের ইতিহাস, সামন্ততান্ত্রিক শোষণ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে শ্রেণীসংগ্রামের ইতিহাস। বেশিরভাগ ঐতিহাসিকেরাই এই গৌরবোজ্জল অধ্যায়টিকে চাতুর্যের সাথে এড়িয়ে গেছেন, অবহেলা করেছেন। একইভাবে অবহেলিত, বিস্মৃত হয়েছেন কমঃ বিষ্ট ঠাকুর। নিজেও প্রচারবিমুখ ছিলেন তাই জীবদ্দশায় তাঁর নাম বাংলার তথাকথিত বিপ্লবী-বুদ্ধিজীবী মহলে প্রচার পায়নি।
মূর্তি, রাস্তা, ফলক না থাকলেও, পুরষ্কার, মানপত্র, ভাতা কিচ্ছুটি না জুটলেও মহান মানুষ চিরকালই মহান থাকেন। কৃষ কবীর বিষ্টু ঠাকুর জনতার কাছে এসেছিলেনএক দুরন্ত অগ্নিঝড়ের ন্যায়। ভয়ঙ্কর উৎপীড়ন ও অত্যাচারের সময়, লড়াইয়ের চড়াই-উৎরাইয়ে, জয় পরাজয়ে, প্রতিটি রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়েছেন সেনাপতির ভূমিকায়, কখনও তাঁদের পরিত্যাগ করেননি। জীবনের ২৪টা বছর কাটিয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে! সেই সংগ্রামী অতীত ভাঙ্গিয়ে নেমে পড়েননি ব্যাবসায়, তাঁর ও আরো অনেক সাথীদের মতো! ফ্যাশনচল বিপ্লবী বা শৌখিন কমিউনিস্টদের ন্যায় ‘ঘোড়ার পিঠে চড়ে ফুলের শোভা' দেখেননি তিনি বরং শ্রেণীসংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আয়ত্ত করেছেন মার্কসবাদ। যা রুপ নিয়েছিল জীবন সত্যে।
লেনিন বলেছিলেন,”একজন বিপ্লবী হওয়া বা সমাজতন্ত্রের ভক্ত হওয়া অথবা সাধারনভাবে কমিউনিস্ট হওয়াটাই যথেষ্ট নয়, প্রতিটি নির্দিষ্ট মুহূর্তে তাকে সক্ষম হতে হবে শৃঙ্খল-মালার মধ্যে নির্দিষ্ট যোগসূত্রটি খুঁজে বার করতে, সর্বশক্তি দিয়ে তাকে আত্মস্থ করতে যাতে করে সমগ্র শৃঙ্খল- মালাটিকে ধরে রাখা যায় এবং দৃঢ়তার সাথে প্রস্তুত হওয়া যায় পরবর্তী যোগসূত্রে উত্তরণ ঘটাবার জন্য”।
সন্দেহ নেই কমঃ বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সেই বিরল কমিউনিস্টদের প্রতিচ্ছবি।
ঔপনিবেশিক ভারত দেখেছিল অসংখ্য শ্রমিক কৃষক বিদ্রোহ, অজস্র গণ অভ্যুত্থান। যার আগুন আজও নেভেনি, নেভার কথাও নয় কারণ