পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিদ্রোহের আগুন। ঐ একই বছর ২৭ অক্টোবর, তোসামারু, নামে অপর একটি জাহাজ কলকাতায় আসে যার আরোহীরা ছিলেন সকলই গদর সমিতির সদস্য। একই রকমভাবে তাদেরকেও আটক/নজরবন্দী করা হয়ে থাকে। নজরবন্দী অবস্থাতেও তাঁরা বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ডে বিরতি দেননি। ১৯১৩ সালে আমেরিকায় প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো 'গদর' পার্টির। গদর শব্দের অর্থ ‘বিপ্লব’। ভারতীয় স্বাধীনতা সংঘ নামক সংগঠন আগেই ছিল। লালা হরদয়ালের দেওয়া নামে নতুন দল আত্মপ্রকাশ করে। যাদের মূলমন্ত্র ভারতের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা। মার্কিন সরকার হরদয়ালকে 'নৈরাজ্যবাদী’ ঘোষণা করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা শুরু করলে হরদয়াল চলে যান জার্মানী। যদিও বাকি সাথীরা - বিষ্ণুগণেশ পিংলে, সত্যেন সেন (তৎকালীন গদর পার্টির একমাত্র বাঙালী) বরকতুল্লাহরা দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। প্রাথমিকভাবে তাদের কাজ ছিল প্রবাসী ভারতীয়দের বিপ্লব মন্ত্রে দীক্ষিত করা ও সশস্ত্র সংগ্রামের পথে নিয়ে আসা।

 প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। একদিকে যেমন হরদয়াল জার্মানীতে বার্লিন কমিটি প্রতিষ্ঠা করে অর্থ, অস্ত্র, লোকবল সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন জার্মান সরকারের সহায়তায়, অন্যদিকে পিংলে গোটা উত্তর-পূর্ব- পশ্চিম-ভারতে বিপ্লবীদের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছেন। বাঘাযতীনের তত্ত্বাবধানেও অখন্ড বাংলা ও ভারতের পুর্বাঞ্চল জুড়ে চলছে সশস্ত্র বিপ্লবের সুমহান পরিকল্পনা। একদিকে জার্মানিতে বন্দী ভারতীয় সেনাদের নিয়ে, সামরিক শিক্ষাশিবির তৈরি করে প্রবাসী বিপ্লবীরা বিরাট সশস্ত্র অভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে চলেছেন অপরদিকে আরেকজন বিপ্লবী একই সময়ে ভাবছেন পাঞ্জাব-সিন্ধুপ্রদেশ, হয়ে বেনারস বাংলা বর্মামুলুক- সিঙ্গাপুর জুড়ে বিরাট সেনাবিদ্রোহের নিখুঁত ছক। গোটা দেশজুড়ে ব্রিটিশ হুকুমতকে উপড়ে ফেলার ছক। শুরুটা হবে পাঞ্জাব থেকে, কারণ পাঞ্জাবের পরিস্থিতি অনেক পরিণত, বিপ্লবের অনুকূল। ‘হিমালয় শিখর থেকে সাগর অবধি’ ব্রিটিশসিংহের ঘুম কেড়ে নেওয়া বাঙালি বিপ্লবী রচনা করতে চাইলেন

৯৪