পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এক মহাকাব্য। বিপ্লবের মহাকাব্য। তিনি রাসবিহারী বসু।

 ঘনিয়ে ওঠা দেশব্যাপী ধুমায়িত অসন্তোষ কাজে লাগাতে চাইলেন রাসবিহারী, সহযোদ্ধা পিংলেকে নিয়ে পাঞ্জাবে রওনা দিলেন ১৯১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। গদর বিপ্লবীদের সাথে আলোচনা করে বিদ্রোহের কেন্দ্রবিন্দু স্থির হল লাহোরে। রাজনৈতিক ডাকাতির মাধ্যমে অর্থসংগ্রহ, অস্ত্রসংগ্রহ, বোমা তৈরি, রেললাইন-টেলিগ্রাম ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেশব্যাপী ব্রিটিশ শাসককে বিপর্যস্ত করার কর্মসূচী নেওয়া হলো। ব্রিটিশ সেনানিবাসের ভারতীয় সৈনিকদের সাথে গোপনে যোগাযোগ করে দিল্লী, লাহোর, আম্বালা, রাওয়ালপিন্ডি, মিরাট, ফিরোজপুর প্রভৃতি স্থানে সেনাছাউনিতে একই সঙ্গে তীব্র সামরিক অভ্যুত্থানের দিন ঠিক হলো ২১শে ফেব্রুয়ারী, ১৯১৫। ক্রমশ যা ছড়িয়ে পড়বে কানপুর, এলাহাবাদ, বেনারস, লোখণৌ, বাংলাদেশ, বৰ্মা হয়ে সিঙ্গাপুর অবধি। গদর পত্রিকা, ও অন্যান্য জাতীয়তাবাদী সাহিত্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল দেশী সিপাহীদের মধ্যে

 ২রা ফেব্রুয়ারী, রাজনৈতিক ডাকাতি করতে গিয়ে অমৃতসরের কাব্বাগ্রামে গুলিতে মারা গেল এক গৃহকর্তা। বিপ্লবী ডাকাতদের ভেতরেই কেউ ছিলো বিশ্বাসঘাতক। পাঞ্জাব পুলিশের কাছে খবর গেল এতো নিছক সাধারণ ডাকাতি নয়। যে ভয়ানক ব্রিটিশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বীজ পোঁতা হয়েছে দেশজুড়ে, তারই জন্য অর্থসংগ্রহ চলছে। তটস্থ হয়ে উঠলো পুলিশ। বিশ্বাসঘাতকের কথায় পরে আসা যাবে, সমস্ত আয়োজন সম্পূর্ণ। গোটা ভারতের বিপ্লবী সমাজের কাছে রাসবিহারীর সহযোগীরা দূত মারফত জানিয়ে দিয়েছেন উত্তর ভারতের শহরে শহরে, সেনানিবাসে একযোগে শুরু হবে সেনাবিদ্রোহ। পাঞ্জাবের সাধারণ গ্রামবাসী থেকে শুরু করে যুগান্তর অনুশীলন সমিতি সকলেই একসাথে অবহিত হয়েছিলো আসন্ন মহাবিদ্রোহের প্রত্যাশায়।

অপ্রচলিত, আগস্ট ২০১৫
৯৫