পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এবং এমার্জেন্সী পওয়ার অ্যাক্ট সেকশন-৬ অনুসারে তা প্রেস বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা নিষিদ্ধ। জজ এবার উধম সিং কে জানান, যে বিষয়টি সর্বসমক্ষে প্রকাশিতই হবে না তা কোর্টরুমে বলে কোনো লাভ আছে কি?

 পরোয়া করলেন না বিপ্লবী উধম। তাঁর অবিচলতা লক্ষ্য করে জজ অগত্যা অনুমতি দিলেন। পকেট থেকে একতাড়া কাগজ বের করে পড়তে থাকেন। তিনি। তাঁর বক্তব্য ছিল সহজ ও সরল। শাস্তি, মৃত্যুদন্ড বা তার অপরাধের কথা বিন্দুমাত্র প্রতিফলিত হল না সেখানে। তাঁর কাজ ও উদ্দেশ্য ছিল নির্দিষ্ট। এবং তাতে বিন্দুমাত্র অনুতাপ নেই। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে নোংরা কুকুরের সাথে তুলনা করে সিং বলে চললেন ‘এমন একটা দিন আসবে যখন ভারত থেকে। ব্রিটিশ শক্তি পালাতে পথ পাবেনা। তিনি জানান সাধারণ ইংরেজ জনসাধারণের ওপর তার বিন্দুমাত্র ক্ষোভ নেই । ইংল্যান্ডে তাঁর সাহেব বন্ধুর সংখ্যা হয়ত স্বদেশের তুলনায় বেশিই। এদেশের শ্রমিক, কর্মচারী মানুষকে আসামী বন্ধুই মনে করেন। তাঁর একমাত্র শত্রু হল পররাজ্যগ্রাসী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জজ এবার অধৈর্য হয়ে পড়েন। তিনি জানান উধম সিং এর বক্তব্য শুনতে আদালত আগ্রহী নয়। সিং হেসে জানান কারণ আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন, আমার বক্তব্য এখনও শেষ হয়নি।

 জুরীরা যখন তাকে মৃত্যুদন্ড দিলেন তখনও একই রকম শান্ত ছিলেন সিং। ডানহাত উপরে তুলে তিনবার ইনকিলাব জিন্দাবাদ বললেন মৃত্যুপথযাত্রী। বিপ্লবী।

 ১৩ মার্চ ক্যাক্সটন হলে, ১৪ মার্চ বা স্ট্রীট পুলিশ স্টেশনে এবং আদালতে যে বক্তব্য রেখেছিলেন অকুতাভের বিপ্লবী তা প্রকাশ হল পত্রপত্রিকায়, সেন্সরশিপ থাকা সত্ত্বেও। ১৩ জুলাই পেন্টাভিল কারাগারে ফাঁসি হয়ে গেল উধম সিং অথবা মহম্মদ সিং আজাদের। আজকে যারা দেশপ্রেমের পাঠ শেখায় তাদের পূর্বজরা অর্থাৎ পাঞ্জাব হিন্দু সভা জালিয়নওয়ালাবাগ গণহত্যার সম্পূর্ণ বিপরীত প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল। যখন। গাটো দেশ ঘৃণায়, ক্রোধে ফেটে পড়ছে তখন তারা নিন্দা তো করেইনি

১৮