পাতা:সেক্‌সপিয়র কৃত গ্রন্থ হইতে উদ্ধৃত অপূর্ব্বোপাখ্যান.pdf/৩৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
টাইমনের উপাখ্যান।
৩৪৩

দুরাত্মা; প্রাচীন লোকদিগের পক্ব শ্মশ্রু দেখিয়া দয়া করিবেন না, তাহারা কুষীদ জীবী। অপর বালক দিগের মৃদু মধুর হাস্য অবলোকনে বিমুগ্ধ হইবেন না, তাহারাও ক্ষমার পাত্র নহে, কেননা বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া পিতৃ পিতামহের বর্ত্মানুসরণ পুরঃসর বিশ্বাসঘাতী হইবে। আপনি এথেন্সের দুষ্ট দমনার্থ যাত্রা করিতেছেন তন্নিমিত্ত নিবেদন করি তথায় উপস্থিত হইয়া দর্শন শ্রবণ দুই ইন্দ্রিয়কে কঠিন করিবেন দুঃখবহ আকৃতি দর্শন ও কাতর শব্দ শ্রবণ মাত্রে যেন অন্তঃকরণে করুণার সঞ্চার না হয় তাহা হইলে কাহারও দমন হইবেক না। কুমারী গণের ক্রন্দন শিশুদের আর্ত্তরব ও প্রসূতিদিগের বিলাপ শ্রবণে দয়ার্দ্র হইবেন না, আবাল বৃদ্ধ সকলের বিনাশ করিয়া যেন নিবৃত্ত হন্। অনন্তর আপনার অন্তঃকরণ মধ্যে এথেন্সের ও মানব জাতির প্রতি সাতিশয় বিদ্বেষ থাকাতে মনে পরমেশ্বর সন্নিধানে প্রার্থনা করিতে লাগিলেন সেনানী সকল বিনষ্ট হইয়া কৃতকার্য্য হউক কিন্তু এ ব্যক্তিও যেন ত্বরায় কালের করাল গ্রাসে পতিত হয় তাহা হইলেই নগর একেবারে নির্নাম হইবেক।

 সেনানী গমন করিলে টাইমন্ সেই অরণ্যমধ্যে পশুবৃত্তি দ্বারা জীবন ধারণ পুরঃসর পূর্ব্বভাবে কাল যাপন করিতে লাগিলেন। কিয়ৎ কাল গতে এক দিন তাঁহার কুটীর দ্বারে এক ব্যক্তি আসিয়া দণ্ডায়মান হইল। সে ব্যক্তি সেই হিতৈষী ধনাধ্যক্ষ ফ্লাবিয়স। প্রভুর প্রতি সাতিশয় ভক্তি ও স্নেহ থাকাতে তাঁহার অদর্শনাবধি নানা স্থানে অন্বেষণ করিতেছিলেন। কুটীর দ্বারে দণ্ডায়মান হইয়া দেখিলেন প্রভু বিবসন পশুবৎ জীবন যাপন করিতেছেন। তাঁহার পূর্ব্বাবস্থা স্মরণ হওয়াতে মনে২ কহিতে লাগিলেন প্রভু জীবন্মৃত হইয়া বুঝি এই কুটীরকে আপনার সমাধি স্থান করিয়াছেন। যাহা হউক ফাবিয়স্ টাইমনের এই অবস্থা অবলোকনে অপার দুঃখার্ণবে মগ্ন হইয়া শোকাবেগে অনেক ক্ষণ নির্বাক ও নিস্পন্দ হইয়া রহিলেন।