কন করিলেন এথেন্স দেশীয় পরিচ্ছদ ধারী অতি মনোহর রূপবান্ এক পুরুষ, এবং তৎপার্শ্বে সর্ব্বাঙ্গসুন্দরী এক রমণী ভূমিশয্যায় শয়ন করিয়া অচেতনে নিদ্রা যাইতেছেন। তাঁহাদের দুই জনকে দেখিয়া স্মরণ হইল পরীরাজ অবিরণ যে ঘৃণিত নায়ক ও তৎপ্রণয়সক্তা এথেন্স নগরী নিবাসিনী নায়িকার অন্বেষণ করিতে অনুজ্ঞা করিয়াছিলেন তাঁহারাই এই দম্পতী। অনন্তর বিবেচনা করিতে লাগিলেন এ স্থানে অন্য প্রাণির সমাগম সম্ভাবনা নাই, এ পুরুষ নিদ্রাভঙ্গে অবশ্য এই কামিনীরই মুখাবলোকন করিবে অতএব অধিপের আদেশানুসারে প্রেম কুসুমের রস ইহার নয়নে নিক্ষেপ করি। কিন্তু দৈবী বিড়ম্বনা কি বিচিত্র। পরীরাজের অমাত্য সেই প্রকার করিয়া প্রস্থান করিলে সে স্থানে হঠাৎ হেলেনা আসিয়া উপস্থিত হইলেন দৈবযোগে তৎকালে লাইসেন্দরের ও নিদ্রাভঙ্গ হইল সুতরাং তাঁহার লোচন হেলেনার প্রতি নিপতিতা হওয়াতে অদ্ভুত কুসুম রসের আশ্চর্য্য শক্তি দ্বারা হেলেনা তদীয় পরম প্রণয় ভাজন হইলেন, হারমিয়ার প্রতি যে প্রেম ছিল তাহা একেবারে অন্তর্দ্ধান হইয়া গেল।
লাইসেন্দর শয়ন হইতে গাত্রোত্থানানন্তর নয়ন দ্বয় বিনিদ্র করিবার সময় অগ্রে যদিস্যাৎ হারমিয়ার প্রতি নেত্রপাত করিতেন তাহা হইলে পরীরাজের অমাত্য ভ্রমবশতঃ যে কুহক করিল তাহাতে বিশেষ ফল দর্শিত না কেননা লাইসেন্দর তাঁহার প্রতি পূর্ব্বাবধি অনুরাগী ছিলেন। কিন্তু ইদানী মোহনীয় কুসুম রসযোগে জাগ্রৎ হইয়া হঠাৎ হেলানাকে অবলোকন করাতে তদাসক্ত হইলেন। একেবারে প্রেমের বশম্বদ হওয়াতে নিশীথে চির প্রণয়িনী সমভিবাহারিণী রমণীকে অরণ্য মধ্যে একাকিনী পরিত্যাগ পূর্বক নবানুরাগ ভাজন হেলেনার আনুগত্য করিতে উদ্যত হইলেন। সুতরাং হারমিয়া বিষম সঙ্কটে পড়িলেন, তাঁহার পরিতাপের পরিসীমা রহিল না।