পাতা:সেক্‌সপিয়র কৃত গ্রন্থ হইতে উদ্ধৃত অপূর্ব্বোপাখ্যান.pdf/৪৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাদৃক্ অভিরুচি।
৪৮১

পতিত হইয়াছেন অতএব ঈষদ্বৈরক্তি প্রকাশ পূর্ব্বক জিজ্ঞাসা করিলেন কাহারও প্রতি হঠাৎ এরূপ প্রীতিযুক্তা হওয়া কি উচিত হয়? রোজালিন্দ উত্তর করিলেন আমার পিতা অর্লান্দোর জনককে ভাল বাসিতেন। সেলিয়া বলিলেন তজ্জন্য কি তুমি তদীয় নন্দনকে আপন নয়নের আনন্দ বর্দ্ধন জ্ঞান করিবে? তবে তো আমি তাহাকে ঘৃণা করিতে পারি? কেননা আমার পিতা তাঁহার জনককে ঘৃণা করিতেন, কিন্তু অর্লান্দোর উপরে আমার বিরাগ মাত্র হয় নাই।

 ফ্রেদ্রিক অর্লান্দোর পরিচয় প্রাপ্তি অবধি তাড়িত সোদরের বন্ধু বান্ধব দিগকে স্মরণ করিয়া ক্রোধের্ষায় পূর্ণ হইল। সে ভ্রাতৃতনয়াকে আশ্রয় প্রদান পূর্ব্বক আপন অঙ্গজার সঙ্গে প্রতিপালন করিত বটে কিন্তু অন্তঃকরণ সহিত স্নেহ করিত না, রাজ্যস্থ জনগণ সেই সুশীলা বালার বিনয়ৌদার্য্য দর্শনে সন্তুষ্ট হইয়া তদীয় জনকের প্রতিষ্ঠা করাতে বরং তৎপ্রতি বিরক্ত ছিল। তাহার দ্বেষ এবং কোপ অনতিবিলম্বে প্রবল হইয়া উঠিল অতএব সে রোজালিন্দের অনিষ্ট চেষ্টায় প্রবৃত্ত হইল। এক দিন সেই কুমারী প্রিয়সখী সেলিয়ার সহিত একত্র উপবেশন পূর্ব্বক অর্লান্দোর প্রসঙ্গ করিয়া কথোপকথন করিতেছিলেন হঠাৎ সেই সময়ে তাঁহাদের নিকট উপস্থিত হওয়াতে ঐ সকল কথা তাহার কর্ণগোচর হইল। ইহাতে ক্রোধান্ধ হইয়া আজ্ঞা করিল রোজালিন্দ, তুই এই দণ্ডে আমার ভবন হইতে দূরীভূত হ। এত বড় আস্পর্ধা, আমার প্রতিদ্বন্দ্বির পক্ষকে স্বপক্ষ জ্ঞান করিস্? তাহার কথা কহিয়া আমোদ করিতেছিস্? পরে আপনার দুহিতাকে কহিল এ অতি দুষ্টা, কেবল তোমার সন্তোষের নিমিত্ত ইহাকে এত দিন এখানে থাকিতে দিয়া ছিলাম। সেলিয়া সহচরীর নিমিত্ত দুঃখিত হইয়া জনক সন্নিধানে বলিতে লাগিলেন