পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 অসম্ভব নয়। কিন্তু তুমি তাহোলে কী করবে। কিছুই লুকোতে পারবে না।

 সর্বনাশ। সব মানুষেরই যে লুকোবার আছে অনেক।

 লুকোনো আছে ব’লেই লুকোবার আছে। যদি কারো কিছুই লুকোনো থাকত তাহোলে দেখা-বিনতি খেলার মতো সবার সব জেনেই লোকব্যবহার হোত।

 কিন্তু লজ্জার কথা যে অনেক আছে।

 লজ্জার কথা সকলেরই প্রকাশ হোলে লজ্জার ধার চলে যেত।

 আচ্ছা আমার কথা কী বলতে যাচ্ছিলে তুমি।

 সেদিন আমি তোমাকে জিগেস করেছিলুম, তুমি যদি সত্যযুগে জন্মাতে তবে আপনাকে কী হয়ে দেখতে তোমার ইচ্ছে হোত। তুমি ফস করে ব’লে ফেললে, কাবুলি-বেড়াল।

 পুপে মস্ত ক্ষাপা হয়ে ব’লে উঠল, কখ্খনো না। তুমি বানিয়ে বলছ।

 আমার সত্যযুগটা আমার বানানো হোতে পারে কিন্তু তোমার মুখের কথাটা তোমারই। ওটা ফস্ ক’রে আমি-হেন বাচালও বানাতে পারতুম না।

 এর থেকে তুমি কি মনে করেছিলে আমি খুব বোকা।

 এই মনে করেছিলুম যে, কাবুলি-বেড়ালের উপর অত্যন্ত লোভ করেছিলে অথচ কাবুলিবেড়াল পাবার পথ তোমার ছিল না, তোমার বাবা বেড়াল জন্তুটাকে দেখতে পারতেন না। আমার মতে সত্যযুগে বেড়াল কিনতেও হোত না পেতেও হোত না, ইচ্ছে করলেই বেড়াল হোতে পারা যেত।

 মানুষ ছিলুম বেড়াল হলুম এতে কী সুবিধেটা হলো। তার চেয়ে যে বেড়াল কেনাও ভালো, না কিনতে পারলে না পাওয়া ভালো।

১৩৯