পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

এই যে মানুষ, মাঝে মাঝে একে পুপুদিদির কাছে এনে হাজির করি,— দেখে তার বড়ো চোখ আরো বড়ো হয়ে ওঠে। খুসি হয়ে বাজার থেকে গরম জিলিপি এনে খাইয়ে দেয়।—লোকটা অসম্ভব জিলিপি ভালোবাসে আর ভালোবাসে শিকদারপাড়া গলির চম্‌চম্‌। পুপুদিদি জিগেস করে, তোমার বাড়ি কোথায়? ও বলে, কোন্‌নগরে, প্রশ্নচিহ্নের গলিতে।

 নাম বলিনে কেন? নাম বললে ইনি যে কেবলমাত্র ইনিতেই এসে ঠেকবেন এই ভয়। জগতে আমি আছি একজন মাত্র, তুমিও তাই, সেই তুমি আমি ছাড়া আর সকলেই তো সে। আমার গল্পের সকল ‘সে’-র উনি জামিন।

 একটা কথা ব’লে রাখি, নইলে অধর্ম্ম হবে। ওকে মাঝে রেখে যে পালা জমানো হয়েছে তার থেকে যারা বিচার করে তারা ভুল করে; যার তাকে চাক্ষুষ দেখেছে তারা জানে লোকটা সুপুরুষ, চেহারা সুগম্ভীর। রাত্তিরে যেমন তারার আলোর ছড়াছড়ি, ওর গাম্ভীর্য্য তেমনি চাপা হাসিতে ভরা। ও পয়লা নম্বরের মানুষ, তাই কোনো ঠাট্টা মস্‌করায় ওকে জখম করতে পারে না। ওকে বোকার মতো সাজাতে আমার মজা লাগে, কেননা ও আমার চেয়ে বুদ্ধিমান। অবুঝের ভান করলেও ওর মান হানি হয় না; সুবিধে হয়, পুপুর স্বভাবের সঙ্গে ওর মিল হয়ে যায়।