পাতা:সোক্রাটীস (দ্বিতীয় খণ্ড) - রজনীকান্ত গুহ.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোক্রেটস [ ১ম ভাগ سوا বলিষ্ঠ মনের ইহাই অন্যতম প্রমাণ, যে তাহারা যেমন অপূর্ব উদ্ভাবিনী শক্তির দ্বারা নব নব রূপ সৃষ্টি করিয়াছেন, তেমনি বিজ্ঞানসন্মত গবেষণার সাহায্যে ললিত কলার তলদেশে প্ৰবেশ করিয়া উহার স্বরূপ ও লক্ষ্য নির্ণয় করিতেও পশ্চাৎপদ হন নাই ; বস্তুতঃ, ইহার কাব্যচর্চায় কল্পনা ও বিচার, উভয়কেই তুল্য স্থান দিয়াছেন। সফক্লাস নিজে নাটক সম্বন্ধে একখানি পুস্তিকা লিখিয়াছিলেন ; এবং এই যুগের প্রধান প্রধান স্থপতিরা স্থাপত্য বিষয়ে গ্ৰন্থ প্ৰণয়ন করিয়া গিয়াছেন। পেরিকীসের প্রযত্নে আথেন্স কিরূপে সুদৃশ্য মন্দির ও সৌধ এবং পরম সুন্দর দেবমূৰ্ত্তিদ্বারা অতুলনীয় শ্ৰীসম্পন্ন হইয়া উঠিয়াছিল, প্ৰথম খণ্ডে আমরা তাহা বৰ্ণনা করিয়াছি। “জয়-শ্ৰী-মণ্ডিত বিক্ৰান্ত গ্ৰীক জাতির গৌরবময় যুগের অনুপম কীৰ্ত্তি-কলাপ চিরজাগ্ৰত করিয়া রাখিবার অভিপ্ৰায়ে পেরিকীসের আমন্ত্রণে গ্রীসের যত কৃতী ও যশস্বী শিল্পী আথেন্সে সমবেত হইলেন। এই অভিপ্ৰায় সংসাধনে ফাইডিয়াস। তঁহার দক্ষিণহস্তস্বরূপ ছিলেন। এয়ুমারস, কিমোন ও পলুগ্নোটস প্রভৃতি চিত্ৰকর; এবং এয়ুড়াইয়ুস, ওনাটাস, মুরোন ও পলুক্কাইটিস ইত্যাদি ভাস্কারগণ অলৌকিক প্ৰতিভার অধিকারী ফাইডিয়াস, এবং তাহার স্বনামধন্য শিষ্য আগরাক্রিটস ও কলোটাসের সহিত মিলিত হইয়া আথেন্সকে রূপলাবণ্যে বস্তুতঃই হেলাসের রাণী করিয়া তুলিলেন। রাষ্ট্রের সেবায় এত বিচিত্রকৰ্ম্ম শিল্পীর সমাবেশ এক আথেন্সেই সম্ভবপর হইয়াছিল। মহৈশ্বৰ্য্যশালী আখীনীয় সাম্রাজ্যের রাজধানীতে পদাৰ্পণ করিয়াই গ্রীকেরা যে দিকে দৃষ্টিপাত করিবে, সেই দিকেই অপরূপ দৃশ্য দেখিয়া তাহাদিগের নয়ন মুগ্ধ এবং প্রাণ বিস্ময়ে ও পুলকে পূর্ণ হইবে, ইহাই পেরিকীসের আকিঞ্চন ছিল ; তিনি রাজকোষের অগাধ ধনরাশি এই আকিঞ্চনপূরণে নিয়োজিত করিয়াছিলেন ; আখীনীয়েরাও তঁহার মহৎ উদ্দেশ্য বুঝিতে পারিয়া অকাতরে অপরিমেয় অর্থব্যয় অনুমোদন করিত।” ( ৪১২-১৩ পৃষ্ঠা )। এক কথায়, সোক্রেটাস যে যুগে আবির্ভূত হন, সেই যুগে আথেন্স গ্ৰীক জগতে শিল্প বাণিজ্যের কেন্দ্ৰ, ললিতকলার প্রতিযোগিতা-ক্ষেত্ৰ এবং সর্বপ্রধান বিদ্যাপীঠে পরিণত হইয়াছিল।